19136

এইচএসসি পরীক্ষা: ২৪ সেপ্টেম্বর বসছেন বোর্ড চেয়ারম্যানরা

এইচএসসি পরীক্ষা: ২৪ সেপ্টেম্বর বসছেন বোর্ড চেয়ারম্যানরা

2020-09-18 18:33:17

করোনা সংক্রমণের মুখে স্থগিত হয়ে যাওয়া চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছেন।

শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা দৈনিক সমকালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওইদিন দুপুর ২টায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বছরের ১ এপ্রিল থেকে এ পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তখন বলা হয়েছিল, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এ পরীক্ষার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হবে। তবে করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে গত সাড়ে পাঁচ মাসেও পরীক্ষা আয়োজনের মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কয়েক দফায় ১৭ মার্চ থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার রুটিন কবে ঘোষণা করা হতে পারে, জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির চেয়ারম্যান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, নতুন সময়সূচি প্রকাশের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

তবে শিক্ষা বোর্ডগুলোর নিজস্ব চিন্তা আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার পর নতুন সময়সূচি ঘোষণা করার। কবে প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে সেটি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ওপর নির্ভর করছে। এজন্য সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে। পরীক্ষা নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যবিধি ও সার্বিক বিষয়ে উচ্চ পর্যায় থেকে ক্লিয়ারেন্স দরকার, তা এখনও আসেনি।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোকবুল হোসেন বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা, একাদশের ভর্তি ও ক্লাস শুরুর বিষয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর বোর্ড চেয়ারম্যানরা বৈঠকে বসবেন। সেখানে এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব তৈরি করা হবে। সেগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ই নেবে।

তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর অন্তত ১৫ দিন সময় দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হবে। এ কারণে পরীক্ষার্থী, শিক্ষক সবাই পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাবেন। তিনি বলেন, এটুকু নিশ্চিত যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না পর্যন্ত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার নতুন সূচি ঘোষণা করা হচ্ছে না।

পরীক্ষা বিলম্বিত হওয়ায় প্রায় ১২ লাখ পরীক্ষার্থী চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। তাদের প্রস্তুতিতে চরম বিঘ্ন ঘটেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা শুরুর ৯ দিন আগে গত ২২ মার্চ তা স্থগিত করে দেওয়া হয়। গত ১ এপ্রিল বাংলা (আবশ্যিক) প্রথমপত্র দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। ঘোষিত সময়সূচি অনুসারে ৪ মে পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা এবং এরপর ৫ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৩ মে পর্যন্ত চলার কথা ছিল। পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সমকাল অফিসে ফোন করে কবে এ পরীক্ষা শুরু হতে পারে, তা জানতে চাচ্ছেন।

পরীক্ষা না হওয়ায় কেন্দ্র সচিবদের সঙ্গে মতবিনিময়, প্রবেশপত্র বিতরণ ও উত্তরপত্র বিতরণও স্থগিত করা হয়। উত্তরপত্রসহ অন্যান্য সরঞ্জাম বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করে ২৩ মার্চ নোটিশ জারি করে সব শিক্ষা বোর্ড। পরীক্ষা নেওয়ার অত্যাবশকীয় এসব সরঞ্জাম ২২ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত বিতরণের কথা ছিল।

কলেজের অধ্যক্ষরা বলছেন, এইচএসসি পরীক্ষার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সম্পর্ক রয়েছে। তাই সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে ঢুকতে এবং বের হওয়ার সময় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। কেন্দ্রের সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়াতে হবে। শ্রেণিকক্ষেও তিন ফুট দূরত্ব নিশ্চিত করে শিক্ষার্থীদের বসাতে হবে। কেন্দ্রে ঢোকার সময় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবার মুখে মাস্ক থাকতে হবে।

রাজধানীর ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মাকসুদ উদ্দিন বলেন, এই পরীক্ষা নিয়ে আর বিলম্ব করা ঠিক হবে না। প্রতি বেঞ্চে একজন করে বসিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া যায়। তিনি বলেন, বিষয় না কমিয়ে শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহে টানা ছয় দিন পরীক্ষা নিয়ে ১৫টি বিষয় ১৫ দিনে শেষ করা সম্ভব। মিরপুর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক গোলাম ওয়াদুদ বলেন, আর কতদিন অপেক্ষা করব। ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। তাই আর দেরি না করে পরীক্ষার কেন্দ্র সংখ্যা বাড়িয়ে এই পরীক্ষা নেওয়া উচিত।

তবে সুস্থ ও রোগমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, সন্তানদের জীবনের নিরাপত্তার প্রশ্নে সরকার গত এপ্রিলে এ পরীক্ষা স্থগিত করে প্রশংসনীয় কাজই করেছেন। সেজন্য আমরা অভিভাবক সমাজ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশে পরবর্তী সময়ে এ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, 'জেড' আকৃতিতে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে পরীক্ষা নিলে কতগুলো শ্রেণিকক্ষ প্রয়োজন হতে পারে, সে ব্যাপারে কাজ করছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এতে একটি কক্ষে প্রথম বেঞ্চে দু'জন শিক্ষার্থী বসলে দ্বিতীয় বেঞ্চে বসবে একজন। এ জন্য প্রতিটি কেন্দ্রের অধীনে আবার একাধিক উপকেন্দ্রও নির্ধারণ করা হচ্ছে। অর্থাৎ, শিক্ষা বোর্ডগুলোও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]