12238

কীভাবে বই পর্যালোচনা করতে হয়  

কীভাবে বই পর্যালোচনা করতে হয়  

2019-01-14 11:24:05

কোন বই সম্পর্কে আলোচনা করা মানে বইয়ের সারাংশ বলা নয়, বইটি সম্পর্কে একটি সমালোচনামূলক আলোচনা করার এটা এক দারুন সুযোগ। আলোচক হিসেবে আপনার ব্যক্তিগত উদ্যোগের সাথে যথাযথ বিশ্লেষণমূলক অধ্যয়নকে একীভূত করে ফেলা উচিত হবে। একটি ভালো আলোচনা পাতায় পাতায় কী আছে তার বর্ণনা দেয়; বইটি নিজ উদ্দেশ্য সাধনে কতটা সফল তার বিশ্লেষণ করে; শেষে একটি অনন্য পরিপ্রেক্ষিত থেকে প্রতিক্রিয়া ও মতামত ব্যক্ত করে।

প্রথম অংশ
গ্রন্থ আলোচনার জন্য প্রস্তুতি
১. বই পড়ার সাথে সাথে নোট গ্রহণঃ যদি সম্ভব হয় তাহলে বইটি বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার পড়ুন। বারবার একটি বই পড়লে পাঠকের চোখে গল্পের শরীরটি দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। গল্পের সজ্জাপদ্ধতি ও চরিত্র বা চরিত্রগুলো নতুন অথবা ভিন্ন আঙ্গিকে ফুটে ওঠে।
বইটি পাঠরত অবস্থায় আপনার মনে যে প্রতিক্রিয়া হবে আর তার সাথে সাথে যে ভাবনাগুলো আসবে তা লিখে ফেলুন অথবা রেকর্ড করে ফেলুন। এলোমেলোভাবে বা ততোটা সঠিক ভাবে না হলেও হবে। আসলে বই পড়ার সাথে সাথে আপনার মনে যে চিন্তা আসবে তার মধ্যে ঝড় তুলে দেয়ার জন্য এই কাজ করা দরকার।

২. বইয়ের ধরণ, রকম/ জ্ঞানজগতের শাখাঃ জ্ঞানজগতের কোন শাখার জন্য বইটি কতটা উপযুক্ত অথবা নয়। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে জ্ঞানজগতের বিভিন্ন শাখা সম্পর্কে ধারণা পরিস্কার করতে বিভিন্ন রকমের বই পড়া যেতে পারে।
যেমন যদি আপনি ১৯৫০ সালে পোলিও ভ্যাকসিন আবিষ্কারের অগ্রগতি সম্পর্কে কোন প্রবন্ধের বই আলোচনা করেন, তাহলে একই সময়কালে একই বৈজ্ঞানিক গবেষণা বিষয়ে রচিত অন্য কয়েকটা বই পড়তে পারেন। অথবা আপনি যদি ন্যাথানিয়েল হথর্ন এর দ্যা স্কারলেট লেটার বইয়ের আলোচনা করেন তাহলে তুলনা করার জন্য সমসাময়িক (১৭ শতকের) অন্যান্য রোমান্টিক ও ঐতিহাসিক কাহিনীর বইগুলোর সাথে হথর্ন এর বইটির পার্থক্য বা মিল কেমন ছিল তাও দেখে নিতে পারেন।

৩. বইয়ের মূল বিষয়বস্তু অনুধাবন করাঃ বইতে লেখা বাক্যগুলোর মাধ্যমেই একজন পাঠক মূল বিষয়বস্তু বা শিক্ষনীয় উপাদানকে অনুধাবন করে। মূল ভাববস্তু হল সমস্ত বইটিতে প্রাধান্য বিস্তার করার প্রধান উপাদান। গল্প/ উপন্যাস জাতীয় কাহিনীগ্রন্থ রচনায় লেখক অনেক সময় একাধিক বিষয়কে একই লেখায় তুলে ধরেন।
বইয়ের ভূমিকার দিকে মনোযোগ দিন; কোন কিছু উদ্ধৃতযোগ্য কি অথবা কোন তথ্য উল্লেখিত হয়েছে কি? এইগুলো বইটার প্রধান উপজীব্য বিষয় ও দৃষ্টিকোনের দিকে আলোকপাত করতে পারে।
বইয়ের প্রধান বিবেচ্য বিষয়কে বোঝার একটি সহজ উপায় হল একটিমাত্র শব্দ দিয়ে বইটিকে চিহ্নিত করা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ‘দ্যা স্কারলেট লেটার’ বইয়ের প্রধান বিষয় হল 'পাপ'। এখন আপনি এই এক শব্দের সারাংশটিকে একটি বক্তব্য বা উপদেশে পরিণত করুন। যেমন 'পাপ হয়তো জ্ঞানের দিকে এগিয়ে দেয়, কিন্তু এর সাথে ভোগান্তির দিকেও ঠেলে দেয়'।

৪. লেখকের রচনাশৈলী/ লেখার ভঙ্গি অনুধাবন করাঃ লেখার ভঙ্গি উদ্দিষ্ট পাঠকের উপযোগী হয়েছে কী না তা নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন। মনে রাখুন মূলভাব হল লেখাটির বৈশিষ্ট্য আর রচনাশৈলী হলো আলোচ্য বিষয়ের প্রকাশ ও উপস্থাপনের একটি আচরণ ভঙ্গি। অতএব বিভিন্ন ভঙ্গি ব্যবহার করে লেখক পাঠকের সামনে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ প্রকাশ করতে পারেন।
যেমন The Scarlet Letter বইয়ে Hawthorne রোমান্টিক যুগের (১৮০০-১৮৫৫) লেখার ভঙ্গি এবং ১৬০০ সালের আমেরিকার শুদ্ধতাবাদীদের প্রাত্যাহিক ব্যবহার্য ভাষাকে এক করার চেষ্টা করেছেন। হথর্ণ এই কাজ অনেক লম্বা বর্ণণামূলক বাক্য দিয়ে করতে চেয়েছেন। বাক্যগুলো অনেক কমা ও সেমিকোলন দিয়ে গাঁথা ছিল। বাইবেল দ্বারা প্রভাবিত শুদ্ধতাবাদী ও রোমান্টিক যুগের ভাষাভঙ্গির বিভিন্ন বর্ণনাত্মক অপ্রচলিত শব্দকেও তিনি ব্যবহার করেছেন।

৫. প্রধান উদ্দেশ্য কী সফলঃ বইয়ের প্রধান দিক অথবা প্রধান উদ্দেশ্যকে লেখক কতটা সফলভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন; কোন আলোচ্য বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করেছেন অথবা করেননি? কেন? সময়কালের মধ্যে কোনো শূন্যতা অথবা চরিত্র চিত্রায়নে কোন দুর্বলতা চিহ্নিত করতে পারা আপনাকে বিশ্লেষণমূলক চিন্তা করতে সাহায্য করবে। একইভাবে বইটির মধ্যে কোন ভালো উপাদান খুঁজে পাওয়া আপনার আলোচনাতে ভালো উপাদান যোগ করবে।

৬. প্রাসঙ্গিক হলে বইয়ের বিন্যাসপদ্ধতিঃ বইয়ের গঠন প্রণালী, বাঁধাই, বর্ণশৈলী ইত্যাদি বইয়ের গঠন এবং কাঠামো সম্পর্কে তথ্য দেয়। যদি লেখক কোনো প্রসঙ্গিক উপাদান যেমন ম্যাপ, ছক বা রেখাচিত্র প্রদান করেন তাহলে সেগুলো বইয়ের মূলভাবকে কতটা প্রামাণ্য করতে পেরেছে বা পারেনি।
স্কারলেট লেটার বইয়ে যেমন, আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে এক ভূমিকা দিয়ে বইটি শুরু করা হয়েছে। এর বর্ণনাকারী হল জনৈক ব্যক্তি যার আত্মজীবনীমূলক অনেক কিছু লেখকের সাথে মিলে যায়। ভূমিকার মধ্যে নামহীন বর্ণনাকারী টকটকে লাল রঙের A বর্ণ দিয়ে পাণ্ডুলিপি খুঁজে পাওয়ার কাহিনী বলেন। হথর্ণ এই বর্ণনাকে গল্পের মধ্যে আর একটি গল্প বলার জন্য ব্যবহার করেছেন। সমস্ত বই সম্পর্কে এটা সত্যিই এক গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ।

৭. সাহিত্যিক উপাদান অনুধাবন করাঃ যদি আলোচ্য বইটি কোনো কাহিনীগ্রন্থ হয় তাহলে এর অংশগুলো কীভাবে সাজানো হয়েছে? বইয়ের চরিত্র, কাহিনীর খণ্ডাংশ, নির্মাণ, প্রতীক, মেজাজ অথবা সুর সম্পর্কে খাতায় টুকে নিন। বইয়ের মূল বিষয়বস্তুর সাথে এগুলো কতটা সম্পর্কযুক্ত?
আমরা যদি 'স্কারলেট লেটার' বইটিকে ধরি, তাহলে দেখা যাবে যে হথর্ণ ব্যভিচারী ও পাপী Hester Prynneকে প্রধান চরিত্র এবং ধার্মিক, পাপবিরোধী রেভারেন্ড উইলসনকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরেছেন। স্কারলেট লেটার এর পর্যালোচনা করার সময় হথর্ণ কেন এরকম করেছেন এবং বইয়ের পাপবিষয়ক প্রধান কাহিনীর সাথে এটা কতটা সম্পর্কযুক্ত তা বিবেচনা করা ভালো হবে।

৮. বইটি কতটা মৌলিক সে সম্পর্কে চিন্তা করুনঃ বইটি যে বিষয়ের সে বিষয়ে কি কোন নতুন তথ্য রয়েছে? লেখক হয়তো আলোচ্য বিষয়ে পূর্ব থেকে প্রচলিত নিয়মকানুন ও ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন অথবা আরো বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিভাবে এটা করা হয়েছে তার মূল্যায়ন করুন। উদ্দিষ্ট পাঠকের গ্রহণক্ষমতাকে এটা কীভাবে প্রভাবিত করবে তাও বিবেচনা করুন।

৯. বইটির সাফল্য মূল্যায়ন করুনঃ বইয়ের সামগ্রিক উদ্দেশ্যকে লেখক সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছেন কী? পাঠশেষে আপনি নিজে কি সন্তুষ্ট? এই বই অন্যদের পড়তে বলবেন কি?

দ্বিতীয় অংশ
আলোচনার প্রথম খসড়া রচনা
১. 'সূচনা' দিয়ে শুরু করুনঃ বেশিরভাগ আলোচনা বইটি সম্পর্কে সব ধরণের তথ্য দিতে পারে এমন একটি 'সূচনা' দিয়ে শুরু হয়। বইয়ের নাম, লেখক, প্রকাশের স্থান, প্রকাশক, প্রকাশের তারিখ, পৃষ্ঠাসংখ্যা উল্লেখ করুন।

২. একটি ভূমিকা লিখুনঃ একটি সুলিখিত ভূমিকা পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। ভূমিকাটি পড়েই পাঠক পরবর্তী অংশ পড়তে আগ্রহী হবে। আলোচনাটি কেমন হতে যাচ্ছে সে সম্পর্কে পাঠককে কিঞ্চিৎ তথ্য দেবে।
আপনার ভূমিকা লেখক সম্পর্কিত পরিচিতি দিয়ে শুরু করুন, যদি সম্ভব হয় তাহলে একই বিষয়ে অন্য লেখার কথাও উল্লেখ করুন। আপনার আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তুর কথা বলতে পারেন। আপনি বইটিকে কীভাবে গ্রহণ করেছেন, পাঠককে কীভাবে একীভূত করে তুলবেন তার বিবরণ দিতে পারেন।
শুরু করার কিছু সম্ভাব্য উপায়: কোন ঐতিহাসিক মুহুর্ত, কোন মজার ঘটনা, অবাক করা অথবা বিরক্তিকর কোন ঘটনা অথবা কোন ঘোষণামূলক উক্তি দিয়ে শুরু করতে পারেন। আপনার সুচনামূলক বাক্যগুলোতে যাই বলা থাকনা কেন খেয়াল রাখুন সেগুলো যেন আপনার করা বইয়ের আলোচনার সাথে সরাসরি সম্পর্ক থাকে। ভূমিকার আকার ছোট এবং বিষয়ানুগত রাখুন।
কীভাবে শুরু করতে হবে তা যদি না জানেন, তাহলে আলোচনা লেখা সম্পূর্ণভাবে শেষ করে তারপর ভূমিকা লিখতে বসুন। এই সময়ে লিখলে আলোচনার শরীরে যা আছে তার সাথে ভূমিকায় বলা কথার সরাসরি মিল থাকার সম্ভাবনা বেশি বলে নিশ্চিত থাকতে পারেন।

৩. বইটির সারমর্ম লিখুনঃ আপনার আলোচনার সূচনা ও ভূমিকা লেখা শেষ হবার পর বইটির মূল ভাববস্তুর একটি সারমর্ম লিখুন।
সারমর্মকে আকারে ছোট, নির্দিষ্ট বিষয়কেন্দ্রিক ও তথ্যমূলক রাখুন।
উক্তি অথবা বাক্যগুচ্ছ ব্যবহার করে আপনার আলোচনার যৌক্তিকতা বাড়িয়ে নিন। রচনাচুরির অভিযোগ এড়াতে আপনার আলোচনায় সঠিক নিয়মে উক্তি ও বাক্যগুচ্ছ বা কয়েকটি ছত্র ব্যবহার করুন।
যে সারমর্মগুলো এই ধরণের বাক্য যেমন "[এই প্রবন্ধ] যে বিষয়ে লেখা তা হল...”[এই বই] যার গল্প তা হল...”। " [এই লেখক] যা লিখেছেন….” দিয়ে শুরু হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। বইটির রচনাশৈলী, বর্ণনামূলক কণ্ঠ এবং ঘটনাগুলোর নিখুঁত বর্ণনা দেবার দিকে মনোযোগ দিন।
শুধুমাত্র বইয়ের মুখবন্ধকে উগড়ে দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
কোন গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রকাশ করে দেবেন না, আপনার সারমর্মে কাহিনীর সমাপ্তি বলে দেবেন না। বইয়ের মাঝখান থেকে শেষ পর্যন্ত কাহিনীর বিস্তারিত বর্ণনা দেবেন না। অবশ্য যদি বইটি কোন সিরিজের অংশ হয় তাহলে পাঠকদের উদ্দেশ্যে সেকথা বলে দিতে পারেন। সিরিজের মধ্যে আলোচ্য বইটির অবস্থান কেমন তারও বর্ণনা করতে পারেন।

৪. বইটির বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করুনঃ বইয়ের সারমর্ম লেখা হয়ে গেলে এবং প্রধান বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্যে আলোচনা করা হয়ে গেলে বিশ্লেষণমূলক আলোচনা শুরু করতে পারেন। এটাই আপনার রচনার হৃদয়। অতএব যতটা পারেন স্পষ্ট এবং বিষয়কেন্দ্রিক থাকুন।
গ্রন্থ সমালোচনামূলক লেখাটি প্রস্তুতকালে আপনার চিন্তারাজ্যে যে সমস্ত প্রশ্ন ও উত্তর ঝড় তুলেছিল, সেগুলোর ব্যবহার করুন। বইটি নিজ উদ্দেশ্য পূরণে কতটা সফল তার বিবরণ দিন। একই বিষয়ের অন্যান্য বইয়ের সাথে আলোচ্য বইটি কতটা তুলনীয় তার বর্ণনা দিন। বিভ্রান্তিকর হয়নি অথবা ভালোভাবে প্রতিষ্ঠা পায়নি- এমন নির্দিষ্ট বিষয় উল্লেখ করুন। আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা কী বলে? যদি থাকে তাহলে বিষয়সংগত বর্ণণা উপস্থাপন করুন।
আপনার বিশ্লেষণমূলক আলোচনাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে সবসময় প্রামাণ্য উদ্ধৃতিসহ (সঠিকভাবে সূত্রের নির্দেশসহ) বাক্যগুচ্ছ ব্যবহার করুন। এটা আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকে শুধু সমর্থনই যোগাবে না পাশাপাশি পাঠকের চোখে লেখার ভঙ্গি এবং বইয়ের বর্ণনারীতিকে তুলে ধরবে।
সাধারণ নিয়ম হচ্ছে গ্রন্থালোচনার প্রথম অর্ধেক অথবা তিন ভাগের দুইভাগ লেখকের প্রধান ভাবনা নিয়ে থাকবে বাকীটুকু অন্তত তিনভাগের একভাগ আলোচনা থাকবে বই নিয়ে।

৫. আলোচনাটিকে প্রস্তুত করুনঃ একটি সমাপ্তিসূচক অনুচ্ছেদ অথবা অন্তত কয়েকটি বাক্য লিখুন যেগুলো আপনার সমালোচনামূলক বিশ্লেষণটিকে অল্প কথায় বুঝিয়ে দেবে। আপনার যৌক্তিক অবস্থান যদি ঠিকভাবে প্রকাশ পায়, তাহলে উপসংহার স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে যাবে।
বইয়ের দুর্বলতা ও শক্তির দিক নির্ণয় করুন। অন্যদেরকে বইটা পড়তে পরামর্শ দেবেন নাকি দেবেন না সে বিষয়ে আলোচনা করুন। কোন ধরণের মানুষ এই বইটার পাঠক হিসেবে বিবেচিত হবে? কোন নতুন উপাদান উপসংহারে উল্লেখ করবেন না। মূল আলোচনায় উল্লেখ করেননি এমন কোন নতুন ভাবনা বা অনুভূতি এই অংশে আলোচনা করবেন না।
আপনি ইচ্ছে করলে সংখ্যাবাচক নম্বর দিয়ে অথবা তারকা চিহ্ন দিয়ে আপনার মূল্যায়ন প্রকাশ করতে পারেন।

তৃতীয় অংশ
আলোচনাটিকে সজ্জাকরণ
১. আলোচনাটি আবার পড়ুনঃ প্রথম প্রচেষ্টায় আপনার গ্রন্থ আলোচনা প্রত্যাশামত ততোটা সঠিক নাও হতে পারে। অতএব মুক্তচিত্তে লেখাটি বারবার পড়ুন, খসড়ার বিন্যাস ঠিক করুন; ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিত বোঝার জন্য আলোচনাটি কয়েকদিন সরিয়ে রাখুন। কয়েকদিন পরের নতুন মনোযোগ নিয়ে গ্রন্থালোচনাটি আবার পড়ুন।
অবশ্যই বানান পরীক্ষা করবেন: বানান ও ব্যাকরণগত ত্রুটিগুলো সংশোধন করুন। একটি ভালো লেখাও ভুল বানান ও খারাপ ব্যাকরণের জন্য অবমূল্যায়িত হতে পারে।
আপনার আলোচনায় উল্লেখিত উদ্ধৃতি ও অনুচ্ছেদগুলোর সূত্র সঠিকভাবে লেখা হয়েছে কীনা তা আবার পরীক্ষা করুন।
২. প্রতিক্রিয়া জানুনঃ কোন সম্পাদক অথবা শিক্ষকের সামনে উপস্থাপনের আগে কারও দ্বারা আপনার আলোচনাটি পড়িয়ে নিন। নিজের লেখার ভুল ধরা ও তা সংশোধন করা কঠিন। অতএব কোন একজন বন্ধুকে আপনার সমালোচনাটি পড়তে দিন। আলোচনার সূচনাংশটি তাদের কাছে আকর্ষণীয় লেগেছে কীনা অথবা আপনার আলোচনাটি আপনার বিশ্লেষণের সাথে কতটা সঙ্গতিপূর্ণ হয়ে গড়ে উঠেছে?

৩. সবচেয়ে ভালো লেখাটি উপস্থাপন করুনঃ আপনার কৃত আলোচনা এবং অন্যদের কাছ থেকে প্রাপ্ত মন্তব্য দুটিকে এক করে শেষ খসড়াটি দাঁড় করিয়েছেন বলে নিশ্চিত হোন। একটি ভালো লেখায় সূচনা থেকে সারাংশ থেকে সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ সবকিছু ধারাবাহিকভাবে প্রবহমান থেকে যাবে। আলোচ্য বইয়ের একটি আকর্ষণীয় বর্ণনা থাকবে এবং সহজে পড়া নিশ্চিত করতে বানান ও ব্যাকরণগত ভুল থেকে বিমুক্ত থাকবে।

অনুমতিক্রমে প্রকাশিত-
মূল লেখার লিংক How to Write a Book Review

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]