25782

মানব সৃষ্টি নিয়ে কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের দাবি

মানব সৃষ্টি নিয়ে কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের দাবি

2022-08-07 22:48:42

আদিম মানুষদের অন্ধ আদিম কল্পনা, আর পরবর্তী অনেকের সুপরিকল্পিত মিথ্যাচার, কখনো কখনো মত্ততা, নানাভাবে বিধিবদ্ধ হয়ে নিয়েছে যে-বিচিত্র রূপ, তাই পরিচিত ধর্ম নামে। তারই প্রমাণ মানুষের সৃষ্টি নিয়ে কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের ব্যাখ্যা।

কোরানের ভুলোমন আল্লাহ মানব সৃষ্টি বিষয়ে একেক সময় একেক দাবি করেছেন, দেখে নেই সর্বজ্ঞানের আধার আল-কোরান কী বলে?

১) পানি থেকে-

'আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল; অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং জীবন্ত সবকিছু পানি থেকে সৃষ্টি করলাম; তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না?’ (২১:৩০)।

২) শুষ্ক ঠনঠনে মাটি থেকে-

‘আমি (আল্লাহ) গন্ধযুক্ত কাদা থেকে তৈরি শুষ্ক ঠনঠনে মাটি থেকে মানুষকে সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা : হিজর, আয়াত : ২৬)

‘পোড়া মাটির মতো শুষ্ক মাটি থেকে (মানুষকে) সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা আর-রহমান, আয়াত : ১৪)

৩) কাদামাটি থেকে-

'স্মরণ করো, তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদের বলেছিলেন, আমি (আল্লাহ) মানুষ সৃষ্টি করছি কাদামাটি থেকে। যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রুহ সঞ্চার করব, তখন তোমরা তার প্রতি সিজদাবনত হয়ো।’ (সুরা : সাদ, আয়াত : ৭২-৭৩)

‘কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা।’ (সুরা সাজদাহ, আয়াত : ৭),

৪) মাটির নির্যাস থেকে

'আর অবশ্যই আমি মানুষকে মাটির নির্যাস থেকে সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা-২৩ : মুমিনুন, আয়াত : ১২)

'আমি তো মানুষকে মাটির উপাদান থেকে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দুরূপে এক নিরাপদ আধারে স্থাপন করি, পরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি জমাট রক্তে, অতঃপর জমাট রক্তকে পরিণত করি পিণ্ডে এবং পিণ্ডকে পরিণত করি অস্থিপিঞ্জরে, অতঃপর অস্থিপিঞ্জরকে মাংস দ্বারা ঢেকে দিই, অবশেষে তাকে রূপ দান করি। সুনিপুণ স্রষ্টা আল্লাহ কত মহান! এরপর তোমরা অবশ্যই মৃত্যুবরণ করবে। অতঃপর কেয়ামতের দিন তোমাদের পুনরুত্থিত করা হবে। আমি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সাজিয়েছি, অমি সৃষ্টির বিষয়ে বেখবর নই।’ (২৩:১২-১৭)।

৫) জমাট রক্তপিন্ড থেকে-

'যিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্তপিণ্ড থেকে। পড়; আর তোমার রব মহীয়ান; তিনি কলমের মাধ্যমে শিক্ষাদান করেছেন, মানুষকে তা শিখিয়েছেন, যা সে জানত না।’ (৯৬:১-৫)।

৬) এক নারী আর এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি

‘হে মানবমণ্ডলী! আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি। আর তোমাদের বিভিন্ন বংশ ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যেন তোমরা পরস্পরে পরিচিতি লাভ করতে পারো।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১৩)

৭) সবেগে স্খলিত বীর্য থেকে-

'তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি(বীর্য) থেকে।'(সুরা আত-তারিক্ব, আয়াত-৬)

'আমি তো মানুষকে মাটির উপাদান থেকে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দুরূপে এক নিরাপদ আধারে স্থাপন করি, পরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি জমাট রক্তে, অতঃপর জমাট রক্তকে পরিণত করি পিণ্ডে এবং পিণ্ডকে পরিণত করি অস্থিপিঞ্জরে, অতঃপর অস্থিপিঞ্জরকে মাংস দ্বারা ঢেকে দিই, অবশেষে তাকে রূপ দান করি। সুনিপুণ স্রষ্টা আল্লাহ কত মহান! এরপর তোমরা অবশ্যই মৃত্যুবরণ করবে। অতঃপর কেয়ামতের দিন তোমাদের পুনরুত্থিত করা হবে। আমি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সাজিয়েছি, অমি সৃষ্টির বিষয়ে বেখবর নই।’ (২৩:১২-১৭)।

মোদ্দাকথা, মাটির উপাদান থেকে> শুক্রবিন্দু> জমাট রক্ত> পিন্ড> অস্থিপিঞ্জর> অস্থিপিঞ্জরকে মাংস দিয়ে ঢেকে দেয়া> অবশেষে মানবরূপ দেয়ার মত হাস্যকর রূপকথার গল্প।

একই রকম হাস্যকর গল্প বলা হয়েছে সহিহি বোখারি হাহাদিসেও...
"তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদান আপন মাতৃগর্ভে বীর্যের আকারে ৪০ দিন, জমাট বাঁধা রক্তে পরিণত হয়ে ৪০ দিন, গোশত আকারে ৪০ দিন। এরপর আল্লাহ একজন ফেরেশতাকে পাঠান এবং চারটি বিষয়ে আদেশ দেন যে, তার (শিশুর) আমল, রিজিক, আয়ুষ্কাল ও ভালো না মন্দ—সব লিপিবদ্ধ করো। অতঃপর তার মধ্যে রুহ ফুঁকে দেওয়া হয়।’ (বুখারি, হাদিস : ২৯৬৮)

সৃষ্টির সব বিষয়ে তাৎক্ষণিক খবর জেনে যাওয়া স্বয়ং আল্লাহ মাতৃগর্ভে ভ্রূণের ১২০ দিন পরে রুহ ফুঁকতে ফেরেশতাকে পাঠানোর আগে ভ্রূণটি কি জীবিত না মৃত, সেই খবর কি জানা ছিল না?
এসব সরল প্রশ্নের উত্তর ধর্মের বইগুলোতে পাওয়া যাবে না, কিন্তু পাওয়া যাবে যদি আমরা ধর্মের উদ্ভবের রীতি উদঘাটন করি। ধর্মগুলো কোনো অলৌকিক জগত থেকে কেউ পাঠায় নি, তেমন কেউ নেই; বিশেষ বিশেষ ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীই সৃষ্টি করেছে এগুলো।

লেখক: সাংবাদিক ও সাহিত্যিক

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]