27636

অনার্সে ফেল হলেও মাস্টার্সে পাস, ইবি শিক্ষার্থীর সনদই বাতিল

অনার্সে ফেল হলেও মাস্টার্সে পাস, ইবি শিক্ষার্থীর সনদই বাতিল

2023-06-01 15:37:26

স্নাতকে পাস নম্বর না পেলে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। কিন্তু কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে ঘটেছে ব্যতিক্রম এক ঘটনা। এক শিক্ষার্থী স্নাতকে অকৃতকার্য হয়েও স্নাতকোত্তরে পাস করেছেন।

ঘটনার চার বছর পর মূল সনদ তুলতে গেলে স্নাতকে অকৃতকার্য হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন শামীরুল ইসলাম নামের ওই শিক্ষার্থী। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ একাডেমিক কাউন্সিলে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। শেষে ওই শিক্ষার্থীর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের দুই সনদই বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীকে বিশেষ পদ্ধতিতে স্নাতকের মানোন্নয়ন পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় একাডেমিক কাউন্সিল। সোমবার (২৯ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। ফলে ওই শিক্ষার্থীকে পুনরায় স্নাতক পরীক্ষা দিতে হবে।

রেজিস্ট্রার দপ্তর ও একাডেমিক কাউন্সিলের একাধিক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, শামীরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৭ সালে ওই শিক্ষার্থীর স্নাতক শেষবর্ষের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ৪১৫ নম্বর কোর্সে অকৃতকার্য হন তিনি। পরে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন শামীরুল ইসলাম। ২০১৮ সালে তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে স্নাকতোত্তরে কৃতকার্য হন। এর চার বছর পর স্নাতক শেষবর্ষে অকৃতকার্য বিষয়ে পরীক্ষার জন্য তিনি আবেদন করলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে ও আলোচনার সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। একাডেমিক কাউন্সিলে তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হলে এ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এসময় সভার কয়েকজন সদস্য এ ঘটনায় বিভাগ ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের গাফিলতির বিষয় তুলে ধরেন।

 

শামীরুল ইসলাম বলেন, ‘মূল কাগজপত্র উত্তোলন করতে গিয়ে এ বছরের ১৭ জানুয়ারি জানতে পারি স্নাতকে আমার একটি বিষয়ে ফেল আছে। কিন্তু সেইসময়ে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। এমনকি বিভাগ থেকেও না। এর আগে আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সাময়িক সনদপত্র উত্তোলন করি। সেখানে আমাকে কৃতকার্যই দেখানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে ডেকেছিল। আমি সব ডকুমেন্ট সেখানে উপস্থাপন করেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘একাডেমিক কাউন্সিলে ওই শিক্ষার্থীর সনদ বাতিল করা হয়েছে। তাকে বিশেষ মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে বলা হয়েছে।’

এ বিষয়ে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসান বলেন, ‘আমি এখনো সিদ্ধান্তের চিঠি পাইনি। এজন্য মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। যতটুকু জেনেছি তদন্তে হয়তো বিভাগের অবহেলা পাওয়া যায়নি। এটা ওই শিক্ষার্থীর নেগলিজেন্স ছিল। তবে মাস্টার্সে ভর্তির সময় ভালোভাবে চেক করলে হয়তো এমন ঘটনা ঘটতো না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত দেবে বিভাগ সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলাম। একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তার দুই সনদ বাতিল করা হয়েছে। মানবিক দিক বিবেচনায় তাকে পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।’

সম্পাদক: ইসমাঈল হোসাইন রাসেল
যোগাযোগ: ক্যাম্পাস টাইমস
৪৩ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, হাটখোলা রোড, চৌধুরী মল, টিকাটুলি, ঢাকা-১২০৩
মোবাইল: ০১৬২৫ ১৫৬৪৫৫
ইমেইল:[email protected]