ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় শিক্ষার্থীর ওপর হামলা, প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন
2024-08-29 19:43:29
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. অনিক আহমেদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, মো. অনিক আহমেদের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শুরু থেকেই সম্পৃক্ত ছিলেন। পরে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে গেলে নিজ এলাকায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। এর জেরে গত ২৫ জুলাই তার নিজ এলাকা বেলকুচি উপজেলার স্থানীয় আওয়ামী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তার ওপর অতর্কিত হামলার অভিযোগ পাওয়া যায়।
মানববন্ধনে ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ বলেন, অনিককে গত চার বছর ধরে আমি যতটুকু দেখেছি, সে যথেষ্ট বিনয়ী এবং মেধাবী ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধ হওয়ার পর সে এলাকায় গিয়ে যখন আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটা ফলপ্রসূ আন্দোলন করে, তখন থেকেই আওয়ামী লীগের সরকারের গুন্ডাবাহিনীদের চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়ায়। বিজয়ের পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় তাকে আঘাত ও হেনস্তা করার চেষ্টা করে তারা। তার নামে একটা মিথ্যা মামলাও করা হয়েছে। সেই মিথ্যা মামলায় সুবিধা না করতে পারে রাতের আঁধারে কুড়াল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি অনিকের উপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
কর্মসূচিতে আরেক সহযোগী অধ্যাপক ইয়ামিন আলী আকন্দ বলেন, আমরা এখন নতুন বাংলাদেশের অবস্থানে আছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফসল হিসেবে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি; কিন্তু এই স্বৈরাচারের অঙ্গসংগঠন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের পেছনে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে আছে এবং যখনই সুযোগ পাচ্ছে তারা আক্রমণ করে যাচ্ছে। তারই একটা দৃষ্টান্ত অনিক আহমেদের ওপর হামলা। আজকে আমাদের দাবি তার বিরুদ্ধে যে মামলা তা প্রত্যাহার করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ও স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, এই স্বাধীন দেশে কোনো অবস্থাতেই আওয়ামী স্বৈরাচারের জায়গা হতে পারেনা। যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটবে আমরা বসে থাকবো না। শুরু থেকেই আমরা যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করতে ভূমিকা রেখেছিলাম তার মধ্যে অনিক অন্যতম। অনিকের ওপর যে মিথ্যা মামলা হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। সেই সাথে হামলায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বিভাগটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমানের সঞ্চালনায় এ সময় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল মানবাধিকার সংগঠন ‘স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’ মানববন্ধন করেন। এতে অনিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার এবং হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনের আওতায় আনার আল্টিমেটাম জানানো হয়। অন্যথায় গনআন্দোলনের ডাক দেওয়ার হুশিয়ারিও দেওয়া হয়।