অনশনে রাবির আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা, পৃথক দাবিতে সাংবাদিকতা বিভাগে তালা
2024-10-30 15:41:26
সেমিস্টার পদ্ধতি বাতিল করে পুনরায় বর্ষ পদ্ধতি চালুর দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৩০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় এ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা।
এতে ‘আইন বিভাগ’ এবং ‘আইন ও ভূমি প্রশাসন’ দুই বিভাগের দুই শিক্ষাবর্ষ থেকে ২৫ জন ছেলে ও ২৫ জন মেয়ে মিলে ৫০ জন শিক্ষার্থী অনশনে বসেন। তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, গত ১০ মাস পূর্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্সের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ফল প্রকাশ না হওয়ায় বিভাগে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে বিভাগের সভাপতির কক্ষ ও অফিস কক্ষে তালা দিয়ে এ কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, কয়েকবছর ধরে বিভাগে নানা অনিয়ম চলছে। জানুয়ারি মাসে পরীক্ষা শেষ করে দশ মাস পার হয়েছে অথচ আমাদের ফলাফল দিচ্ছে না। শিক্ষকরা বারবার আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছেন। রেজাল্ট না দেওয়ার ফলে অনেক চাকরি পরীক্ষাতেও অংশগ্রহণ করতে পারছে না। এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিভাগের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
সাংবাদিকতা বিভাগসূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর মাস্টার্সের পরীক্ষা শুরু হয়। পরে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি ভাইবার মাধ্যমে পরীক্ষা শেষ হয়। দশ মাস পেরিয়ে গেলেও নানা জটিলতার কারণে এর ফলাফল আটকে আছে।
বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ফলাফল প্রকাশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনোভাবেই সহায়তা করছে না। এখানে অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষক মুসতাক আহমেদ পরীক্ষা কমিটির প্রধান ছিলেন। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে সবকিছু তার কাছে আটকে রেখেছে। আমরা অনতিবিলম্বে ফলাফল চাই এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
এদিকে অনশনে থাকা আইন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শেখ রাফিন বলেন, আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন করব। প্রয়োজনে আমাদের মৃত্যু হবে তবুও দাবি আদায় করে এখান থেকে যাব।
আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনামিকা সুষ্মি বলেন, আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া সেমিস্টার পদ্ধতি বাতিল চাই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে যাবো না। এ সময় আইন বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। তবে অনশনে অংশগ্রহণ করেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, 'আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙেছে। আমি তাঁদের আশ্বস্ত করেছি যত দ্রুত সম্ভব আমরা একটি সমাধানে যাব। এছাড়া গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট না দেওয়ার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করছি। আসলে এত মাস ধরে অপেক্ষা করা সম্ভব নয়। বিভাগের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি, আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই রেজাল্ট প্রকাশিত হবে।'