ছেলেকে বাঁচাতে আইসিইউ ছেড়ে দিলেন মা


Chittagong | Published: 2021-07-29 16:28:57 BdST | Updated: 2024-03-19 10:51:47 BdST

শ্বাস নিতে পারছেন না ছেলে। তাঁর আইসিইউ প্রয়োজন। কিন্তু বেড খালি নেই। এমন খবর শোনার পর আইসিইউতে থাকা মা নিজের হাতে লাইফ সাপোর্টের সরঞ্জাম খুলে ছেলেকে আইসিইউতে আনতে চিকিৎসককে ইশারা করেন। চিকিৎসকেরাও মায়ের কথা শুনলেন। ছেলেকে আইসিইউতে রেখে, মা চলে যান সাধারণ বেডে। এখন দুজনের অবস্থাই সংকটাপন্ন। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার মা প্রভা রানী ছিলেন আইসিইউতে, আর ছেলে শিমুল পাল ছিলেন একই হাসপাতালের সাধারণ বেডে। অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে ছেলের। একপর্যায়ে তাঁরও আইসিইউর প্রয়োজন হয়। এ খবর শোনার পর মা চিকিৎসককে ইশারা করে বলেন, তাঁর জায়গায় ছেলেকে আইসিইউতে রাখতে। যখন চিকিৎসকেরা দেরি করছিলেন, তখন আইসিইউতে থাকা মা নিজের হাতে লাগানো লাইফ সাপোর্টের সরঞ্জাম খুলে ফেলেন। পরে একপ্রকার বাধ্য হয়ে ছেলেকে আইসিইউতে আনেন চিকিৎসকেরা। মা চলে যান সাধারণ বেডে।

তাঁদের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আব্দুর রব মাসুম।

প্রভা পাল করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর আইসোলেশন ওয়ার্ডে ছিলেন কিছুদিন। পরে ২২ জুলাই আইসিইউ ওয়ার্ডে নেওয়া হয় তাঁকে। এর এক দিন আগে ২১ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে আসেন তাঁর ছেলে শিমুল পাল।

অন্যদিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে বাবা মারা যাওয়ার পর ছেলেও মারা গেছেন একই হাসপাতালের আইসিইউতে।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে মারা যান বাবা আবু সৈয়দ চৌধুরী (৭০) এবং পরদিন বুধবার সকালে তাঁর ছেলে মো. আলমগীর (৩৫) মারা যান। তাঁরা বোয়ালখালীর চরখিজিরপুর এলাকার বাসিন্দা। আলমগীর স্থানীয় একটি দোকানে চাকরি করতেন।

বোয়ালখালীর ইউএনও নাজমুন নাহার বলেন, মঙ্গলবার রাতে মারা যাওয়া বাবার দাফনের কাজ প্রস্তুতির সময় তাঁর ছেলের মারা যাওয়ার খবর আসে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট আবদুর রব মাসুম বুধবার রাত ১২টার দিকে বলেন, এখানে দুটি ঘটনা ঘটেছে। একটি বাবা-ছেলের। এর মধ্যে বাবা মারা যাওয়ার পরে আইসিইউতে থাকা ছেলেও মারা যান। অন্যদিকে মা-ছেলের ঘটনায় দুজনই বেঁচে আছেন। তবে তাঁরা সংকটাপন্ন।

//