প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ‘ইনসাফপ্রত্যাশী জনতার প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি’ বলে মন্তব্য করেছে নবগঠিত সংগঠন ‘জাস্টিস ফর জুলাই’। তারা জুলাই গণহত্যার বিচারের জন্য একটি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে কাজ করা সংগঠনটির আহ্বায়ক আরেফিন মোহাম্মদ ও সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিনের বিবৃতিতে আজ বৃহস্পতিবার এ কথা বলা হয়।
নেতারা বলেন, বুধবার জাতির উদ্দেশে ড. ইউনূসের দ্বিতীয় ভাষণে অনেক আশা জাগানিয়া প্রস্তাবনা ছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশের সংবিধান, আমলাতন্ত্র, পুলিশসহ ছয়টি সেক্টরের সংস্কারের উদ্দেশ্যে যে কমিশন করার ঘোষণা এসেছে এবং যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা জনগণের মনে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষাকে জিইয়ে রাখতে সক্ষম হবেই বলে আমরা মনে করি। এ ছাড়া প্রশাসনের লাগাম এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে যা জনগণকে কিছুটা স্বস্তি দেবে। কিন্তু সব সংস্কারের ঊর্ধ্বে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে চালানো গণহত্যার বিষয়টি সবার আগে বিহিত করার দরকার ছিল। এ ক্ষেত্রে ড. ইউনূস তাঁর ভাষণে ‘জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠার কথা আবারও বলেছেন। এর উদ্দেশ্য মূলত সব শহীদ পরিবার এবং আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসাসহ তাদের পরিবারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেওয়া। কিন্তু তাঁর ভাষণে এই স্মৃতি ফাউন্ডেশন কীভাবে কাজ করবে বা কবে থেকে পুনর্বাসন ও আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা রাষ্ট্র শুরু করবে তার সুনির্দিষ্ট রূপরেখা নেই। এখনও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের হাজারো আহত বীর হাসপাতালে সুচিকিৎসার অভাবে কাতরাচ্ছেন, টাকার অভাবে চিকিৎসাহীন দিনাতিপাত করছেন, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তাদের চিকিৎসার জন্য অর্থের আবেদন জানিয়ে আকুতি দেখা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য সম্মিলিতভাবে লজ্জার। আমরা আশা করেছিলাম ড. ইউনূসের ভাষণে এই বিষয়ে ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা থাকবে। পরিতাপের বিষয়, এই গণহত্যার বিচার কীভাবে হবে, তা নিয়ে কোনো নজরে আসেনি।
জাস্টিস ফর জুলাইয়ের নেতারা বলেন, পুলিশ, র্যাবসহ নিরাপত্তা বাহিনী এবং মাফিয়া হাসিনার নির্দেশে রক্তপিপাসু আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগের যৌথ আয়োজনে সংঘটিত গণহত্যার আলামত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এ অবস্থায় আলোচিত ছয়টি কমিশনের সঙ্গে জুলাই গণহত্যা বিচার বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিশন গঠন করতে হবে।