এবার টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৪ সালের ‘টাইম-১০০’-তে নাহিদ ইসলামের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন তিনি। প্রতিবছর বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির এই তালিকা প্রকাশ করে বিখ্যাত সাময়িকীটি।
বুধবার (২ অক্টোবর) এই তালিকা প্রকাশ করে টাইম ম্যাগাজিন। ১৯৯৯ সাল থেকে নিয়মিত এই তালিকা প্রকাশিত হচ্ছে। এতে ‘উদীয়মান নেতা’ ক্যাটাগরিতে নাম রয়েছে নাহিদ ইসলামের।
বাংলাদেশে গত জুলাই-আগস্ট মাসের ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার মাধ্যমে পরিচিত হয়ে ওঠেন নাহিদ ইসলাম। ওই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে গণঅভ্যুত্থানে প্রধান ভূমিকা রাখেন তিনি। বিশেষ করে গত ৩ আগস্ট জাতীয় শহীদ মিনারে লাখো জনতার সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হয়ে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন নাহিদ। আর সেই এক দফা দাবি হলো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ এই সরকারের পদত্যাগ।
ওই আন্দোলনেই গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন তিনি। এরপর থেকেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন নাহিদ।
সেনাবাহিনীর সমর্থনে হঠাৎ তখন দেশ পরিচালনার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করেন ছাত্ররা। ছাত্রদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান হন ৮৪ বছর বয়সী অর্থনীতিবিদ। নাহিদ ইসলাম দায়িত্ব নেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের।
সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক নাহিদের বয়স ২৬ পেরোয়নি। এর মধ্যেই তিনি হয়ে গেছেন মহান এক সংগ্রামের নেতা। গত ২৪ সেপ্টেম্বর নাহিদ ইসলামের সাক্ষাৎকার নেয় টাইম ম্যাগাজিন।
টাইম ম্যাগাজিন নাহিদ সম্পর্কে লিখেছে, আন্দোলনের অনেক নেতার মধ্যে নাহিদ অন্যতম। বাংলাদেশের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরে জনমানুষের কাছে তার পরিচিতি আরও বাড়তে থাকে।
আর টাইম ম্যাগাজিনকে নাহিদ বলেছেন, ‘কেউ ভাবতেও পারেনি শেখ হাসিনাকে উৎখাত করা সম্ভব হবে। কিন্তু তা-ই করে দেখিয়েছে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা।’
নতুন দায়িত্ব সম্পর্কে নাহিদ আরও বলেন, ‘এখন অন্তর্র্বতী সরকারের ওপর মানুষের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী। গত ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যেভাবে ভেঙে পড়েছে, এখন তা মেরামতের চ্যালেঞ্জ নিতে হচ্ছে নতুন সরকারকে।’
এ বিষয়ে টাইম ম্যাগাজিনকে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতার যে পালাক্রম, তার অবসান ঘটাতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’