সম্প্রতি সরকার বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন দ্বীপ নারিকেলজিঞ্জিরায় (সেন্ট মার্টিন) পর্যটক যাওয়া সীমাবদ্ধ করেছে। বিশেষ করে শীতকালে যে ৪ মাস দ্বীপটিতে পর্যটক যাওয়া আসা বেশি হয়, তখনই পর্যটকদের উপর নানান বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। পরিবেশ রক্ষার নামে এটি বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে ক্ষতিগ্রস্থ করে ভারতীয় পর্যটনকে লাভবান করবে।
বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে যখন বাংলাদেশীদের যাতায়াতে বাধা দেয়া হবে, তখন স্বাভাবিকভাবে পর্যটকরা ভারতমুখী হবে।ভারতের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে তখন বাংলাদেশীরা যাতায়াত শুরুকরবে। এটা দেশের ভ্রমণশিল্প ও অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক প্রভাবফেলবে।
এছাড়া, বাংলাদেশের ভ্রমণ শিল্পকে বাধাগ্রস্থ করতে টোয়াবের দেয়াতথ্য মতে, ট্যুর অপারেটর নিবন্ধনসংক্রান্ত নতুন বিধিমালায় কিছুনিয়ম ও শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, ট্যুর অপারেটর, ট্যুর গাইড নিবন্ধন ও পরিচালনার লাইসেন্স আবেদনে ৫০ হাজারটাকা লাগবে। এ ছাড়া ১০ লাখ টাকা ব্যাংক স্থিতি ও তিন লাখ টাকাজামানতের বাধ্যবাধকতা আছে। এছাড়া ট্যুর অপারেটর সেবায় ১৫ শতাংশ মূসক (ভ্যাট) ধার্য করার ভ্রমণ ব্যয় বাড়ছে। এটি বাস্তবায়িতহলে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি গোটাপর্যটনশিল্প ভারতমুখী হয়ে পড়বে। অতএব, পরিবেশবাদেরছদ্মাবরণে নারিকেল দ্বীপ ভ্রমণ ও অবস্থানের উপর বিধি নিষেধআরোপ বাংলাদেশের পর্যটনকে ভারতমুখী করার কোনো ষড়যন্ত্রহচ্ছে কি না সেটি খতিয়ে দেখা জরুরী।
তাছাড়া ২০২২ সালে ৪ঠা জানুয়ারী বিগত জালেম সরকার আমেরিকাও ভারতের স্বার্থে বাংলাদেশের পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক সেন্টমার্টিনদ্বীপ সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিমি এলাকাকেসামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। পরিবেশেরছদ্মাবরণে যেটা ছিল মার্কিন-ভারত জোটের ইন্দো-প্যাসিফিকস্ট্রাটেজির অংশ। ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজিতে প্রবেশ করে বাংলাদেশযাতে আমেরিকা-ভারত বনাম চীন দ্বন্দ্বের বলির পাঠা না হয় সেজন্যইতিপূর্বে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ একটি বিবৃতিও দিয়েছিল।
বর্তমান অন্তর্বর্তি সরকার গত আওয়ামী সরকার কর্তৃক জারীকৃতপরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সেই প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশের স্বার্থ ও ঝুঁকিবিচার-বিশ্লেষণ না করে নারিকেল দ্বীপ ভ্রমণ ও অবস্থানের উপরবিধি-নিষেধ আরোপের মাধ্যমে গত জালেম সরকারকে অনুসরণকরছে বলে মনে করছে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি।
নারিকেল দ্বীপ ভ্রমণে বিধি নিষেধ আরোপের নেতিবাচক প্রভাব বলেশেষ করা যাবে না। ওই দ্বীপের স্থানীয় জনগণ ১০/১২ হাজার হলেওদ্বীপের ভ্রমণশিল্পের সাথে জরিত মানুষের সংখ্যা অর্ধ কোটিরওবেশি।
বিশেষভাবে স্থানীয়দের ৯৫ ভাগ মানুষের জীবন-জীবীকার উপায়শীতকালের ৪ মাসের ভ্রমণশিল্প। সরকার পরিবশে রক্ষার নামে সেইচার মাসেই ভ্রমণের উপর বিধি নিষেধ আরোপ করেছে যেটাদ্বীপবাসীর প্রতি সরকারের অমানবিক সিদ্ধান্ত ও মৌলিক অধিকারহরণ। সব দিক বিবেচনায় আমরা নারিকেল দ্বীপের উপর আরোপিতসব ধরণের বিধি নিষেধ তুলে দেয়ার দাবী করছি।