নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর ঢাকা কলেজ


Desk report | Published: 2023-02-02 04:50:14 BdST | Updated: 2024-03-19 11:18:15 BdST

ঢাকা কলেজের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে আজ (বুধবার)। সকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে কলেজ প্রাঙ্গণ। কলেজের মূল ফটক, শহীদ মিনার চত্বর, খেলার মাঠ, পুকুরপাড়সহ পুরো ক্যাম্পাসজুড়েই নবীনদের ছড়াছড়ি।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা কলেজের শহিদ আ ন ম নজিব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে একাদশ শ্রেণির এসব নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এবার বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখায় ১ হাজার ২শ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। যার মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ৯০০ জন, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১৫০ জন এবং মানবিক বিভাগে ১৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম ক্লাস করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন নবীন শিক্ষার্থীরা। সঞ্জয় নন্দী শুভ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা কলেজ নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। দেশ সেরা শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ পড়াশোনার সময় অতিবাহিত করতে পারব ভেবেই অনেক আনন্দ লাগছে।

মিসবাহ হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, উচ্চমাধ্যমিকের পড়ালেখা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের প্রাচীন ও আধুনিক কলেজে ভর্তি হতে পেরেছি এটি আমার জন্য অনেক আনন্দের। জীবনের লক্ষ্য অর্জনে এই সময়টুকু আমাদের জন্য সহায়ক হবে এমন প্রত্যাশা করছি।

অপরদিকে উচ্চমাধ্যমিকে শ্রেণির এসব নবীন শিক্ষার্থীদের কঠোর নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার মধ্যে রাখার জন্য ইতোমধ্যেই বেশকিছু নির্দেশনার কথাও জানিয়েছে কলেজ প্রশাসন। অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবীন ছাত্রদের অবশ্যই মানতে হবে এমন ১৬টি বিষয় দৃষ্টিগোচর করা হয়েছে। সেগুলো হলো-

১. কলেজের নির্ধারিত পোশাকে ক্লাসে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক।

২. কলেজে থাকাকালীন সার্বক্ষণিক পরিচয়পত্র (আইডিকার্ড) গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে।

৩. কলেজে স্মার্টফোন এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস আনা সম্পূর্ণ নিষেধ। তবে জরুরি প্রয়োজনে শ্রেণি কক্ষের বাইরে বাটন ফোন সঙ্গে রাখা যাবে।

৪. ক্লাস চলাকালে ক্লাসের বাইরে, ক্যান্টিনে, খেলার মাঠে, করিডোর বা অন্য কোথাও অবস্থান করা যাবে না। এই সময়ে কলেজ ক্যাম্পাস অথবা ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ম-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে কোনো ছাত্র সম্পৃক্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৫. একাডেমিক ক্যালেন্ডারে বর্ণিত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী সব ক্লাস ও পরীক্ষা নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন হবে।

৬. ক্লাসে উপস্থিতি ৮০ শতাংশ বাধ্যতামূলক। নির্ধারিত উপস্থিতি ব্যতীত কলেজের কোনো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যাবে না। সুনির্দিষ্ট কারণ ও প্রমাণপত্র ছাড়া কোনো ছুটির আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না।

৭. ক্লাসে প্রবেশের সময় সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত। ৮টা ৪৫ মিনিটে জাতীয় সংগীত এবং শপথ বাক্য পাঠে সব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করতে হবে।

৮. ক্লাসে উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য ২ বার ফেইস আইডি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রবেশের সময় ফিঙ্গারপ্রিন্ট সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত। ৮টা ০১ থেকে ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত বিলম্ব উপস্থিতি হিসেবে গণ্য হবে । আর ৩ দিন বিলম্ব উপস্থিতি হলে ০১ দিন অনুপস্থিত হিসেবে গণ্য করা হবে। একই সঙ্গে ৮টা ১৫ মিনিটের পরে কলেজের সব গেইট বন্ধ থাকবে।

৯. ৮০ শতাংশ এবং তদূর্ধ্ব উপস্থিতির জন্য নির্ধারিত নম্বর বরাদ্দ থাকবে। এক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ উপস্থিতির জন্য ৩ নম্বর, ৮১-৯০ শতাংশ উপস্থিতির জন্য ৪ নম্বর, ৯১ শতাংশের ওপর উপস্থিতির জন্য ৫ নম্বর বরাদ্দ থাকবে। এই নম্বর অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষার প্রতিটি বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে যোগ করে চূড়ান্ত ফল তৈরি করা হবে।

১০. ক্লাস টেস্ট ও অর্ধ-বার্ষিকের ফলের সমন্বয়ে অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার ফল তৈরি হবে। একইভাবে অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার একটি নির্দিষ্ট নম্বর ও ক্লাসটেস্ট পরীক্ষার নম্বরও বার্ষিক পরীক্ষার ফলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে চূড়ান্ত ফল তৈরি হবে।

১১. এনসিটিবি প্রণীত পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস অনুসারে ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে।

১২. ব্যবহারিক ক্লাসের উপস্থিতি তত্ত্বীয় ক্লাসের উপস্থিতির সঙ্গে যোগ করে ফিট লিস্ট তৈরি করা হবে।

১৩. কোনো ছাত্র অসুস্থ হলে তার অভিভাবক অসুস্থ আছে মর্মে ছাত্রের আবেদন সঙ্গে সঙ্গে নিবিড় কমিটির আহ্বায়কের কাছে জমা দেবেন এবং সুস্থ হলে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনসহ ছাত্র এবং অভিভাবক এসে ছুটি মঞ্জুর করিয়ে নেবেন। পরে কোনো ছুটির আবেদন মঞ্জুর করা হবে না। পরীক্ষায় যোগ্যতার মাপকাঠি ৮০ শতাংশ হওয়ায় ১ থেকে ৩ দিনের আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

১৪. ক্লাসে ৮০ শতাংশ উপস্থিতি এবং অভ্যন্তরীণ সব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও উত্তীর্ণ না হলে আবাসিক শিক্ষার্থীর সীট বাতিল হবে।

১৫. কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ম শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থী সম্পৃক্ত হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ও অভিভাবক দায়ী থাকবেন এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

১৬. কলেজ পরিবহন ব্যবহারকারী শিক্ষার্থী কলেজ পরিবহন ও অন্যান্য কোনো পরিবহনের ক্ষতিসাধন করলে তার বিরুদ্ধেও ক্ষতিপূরণসহ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

//