মশায় অতিষ্ঠ চবি শিক্ষার্থীরা, বাড়ছে ডেঙ্গুর আতঙ্ক


CU Correspondent | Published: 2022-11-15 03:02:23 BdST | Updated: 2024-04-18 15:51:28 BdST

চট্টগ্রাম নগরীতে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। যার প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ববিদ্যালয়েও। এ নিয়ে আতঙ্কে দিন পার করছেন শিক্ষার্থীরা।

সন্ধ্যা হলেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভয়াবহ ভাবে বেড়ে যায় মশার উৎপাত। এখানে ড্রেনে জমে থাকা পানি ও অসংখ্য ঝোপঝাড়ের কারণে মশার প্রকোপ এমনিতেই বেশি। তার উপর যেখানে-সেখানে ফেলে রাখা ময়লা নিয়মিত পরিষ্কারের অভাবে বেড়েছে মশার আবাসস্থল। তবে এতে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের।

 

বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, জিরো পয়েন্ট, স্টেশন চত্তর, শহীদ মিনার, লেডিস ঝুপড়িতে আড্ডা দিতে বসা শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। তাছাড়া কলা ঝুপড়িতে দিনের বেলাতেও চলে মশার অত্যাচার। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাটা পাহাড়ের পাশের মূল ড্রেনে জমে আছে দীর্ঘদিনের পানি। তাছাড়া ঝুপড়ির পাশে ময়লার স্তূপেও আছে মশার আবাস। পাশাপাশি হলের অপরিচ্ছন্ন বাথরুম ও নালার কারণেও বাড়ছে মশা। শিক্ষার্থীরা মশার যন্ত্রণায় ভুগলেও এখনো প্রশাসনকে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ছিটানো হয়নি মশার কোনো ওষুধ।

প্রীতিলতা হলের শিক্ষার্থী সুস্মিতা বড়ুয়া জানান, রুমের পাশের পরিবেশ খুবই অপরিচ্ছন্ন। হল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। অপরিষ্কার পরিবেশ থাকায় দিন দিন মশার উপদ্রব বেড়েই চলেছে। আগে রাতের বেলায় উপদ্রব বেশি থাকতো। কিন্তু এখন দিনের বেলাতেও মশার যন্ত্রণায় রুমে থাকা যাচ্ছে না। তাছাড়া দিন দিন ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকায় হলের মেয়েদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

 

সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ শরীফ বলেন, আগে সন্ধ্যায় স্টেশনে আড্ডা দিতাম। মশার কারণে তা বাদ দিয়েছি। কিন্তু হলের রুমেও শান্তিতে বসা যায় না। হলের ওয়াশরুম গুলো খুবই নোংরা থাকে। যার কারণে ময়লা পানি জমে থাকে। এছাড়াও হলের আশপাশে বিভিন্ন স্থানের ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করা ও ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থাকায় মশার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মশা তাড়াতে প্রশাসনকে সতর্কতামূলক কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ড. এ. কে. এম. রেজাউর রহমান জানান, শিক্ষার্থীরা মশা নিয়ে যন্ত্রণায় আছে তা জানি। আমরা এরই মধ্যে হল টিউটরদের ডেকেছি। তাদের সঙ্গে বসে মশা রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এ ব্যাপারে চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, হলে শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘবের দায়িত্ব প্রভোস্টদের। তাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে মশার ঔষধ কিনে প্রয়োগ করার। প্রত্যেকটি হলে স্প্রে বক্সও দেওয়া রয়েছে। এখনো যেহেতু তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি, উপাচার্যের মাধ্যমে তাদের একটি নির্দেশনা দিতে বলা হবে। পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা কর্মীদেরও নির্দেশনা দেওয়া হবে যাতে কোথাও পানি জমে না থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করছে। চবিতে অতিরিক্ত বন-জঙ্গল, অপরিচ্ছন্ন ড্রেন, জমে থাকা পানির কারণে মশার বংশবিস্তার বেশি ঘটে। শিক্ষার্থীদের সচেতন হওয়া ছাড়া উপায় নেই। মশারি ব্যাবহার করা সর্বোত্তম। কারণ কয়েল ব্যবহারে শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকি থাকে।