শিগগিরই অসচ্ছল ছাত্রীদের আর্থিক সুরক্ষা বলয়ের আনবে ঢাবি


DU Correspondent | Published: 2023-03-10 06:59:52 BdST | Updated: 2024-04-20 06:43:53 BdST

অতি শিগগিরই অসচ্ছল ছাত্রীদের আর্থিক সুরক্ষা বলয়ের আওতায় আনার কথা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের ৫ম তলায় ঢাবির প্রথম ছাত্রী লীলা নাগ-এর নামে লীলা নাগ পরীক্ষার হলের নামফলক উন্মোচন করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান লীলা নাগের জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে আত্মপ্রত্যয়ী, উদ্যমী ও সাহসী নারী হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার জন্য তিনি বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল ছাত্রীদের আর্থিক সুরক্ষা বলয়ের আওতায় আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সহায়তা প্রদানের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে নারীর প্রতি সামাজিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রযুক্তিগত নির্যাতন বন্ধে কার্যকর প্রযুক্তি উদ্ভাবনের উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী লীলা নাগের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ১৯২১ সালে তিনি ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। শিক্ষা জীবন শেষে তিনি সমাজ সংস্কারে আত্মনিয়োগ করেন এবং সামাজিক রূপান্তর ঘটানোর ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করেন। নারী শিক্ষা, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারীদের মাঝে সামাজিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি দীপালি সংঘসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। যা বাঙালি নারী সমাজে ব্যাপক জাগরণ সৃষ্টি করে। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন এবং সমাজের অবহেলিত ও বঞ্চিত নারীদের উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।

অনুষ্ঠানে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছিরের সভাপতিত্বে ‘লীলা নাগ পরীক্ষার হল’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইংরেজি বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক জেরিন আলম বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আমি নিজে একজন নারী হিসেবে লীলা নাগের কথা ভাবলে ভালো লাগে। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি সামাজিক নারী উন্নয়নে ভূমিকা রেখে গেছেন। তখনকার দিনে নারী পুরুষ একসাথে পড়াশোনা করতো না। এজন্য লীলা নাগকে ঢাবি থেকে এমএ ডিগ্রি নিতে অনেক সমস্যার মাঝে যেতে হয়েছে। যেখানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় মেয়েদের ১৯২০ সাল থেকে মেয়েদের ছেলেদের সাথে পড়া ও ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ দেয় সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠাকালেই এই সুযোগ প্রদান করে। পড়াশোনা সামাজিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি তিনি রাজনীতির সাথে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন, যা বর্তমান নারীদের জন্য বড় একটা শিক্ষা।

উল্লেখ্য, লীলা নাগের জন্ম ১৯০০ সালে ভারতে। তিনি ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী হিসেবে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। তিনিই প্রথম এমএ ডিগ্রিধারী মেয়ে। বাঙালি নারীদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ঢাকার আরমানীটোলা বালিকা বিদ্যালয়, কামরুন্নেসা গার্লস হাইস্কুল এবং শেরে বাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭০ সালের ১১ জুন ভারতে এই মহীয়সী নারীর জীবনাবসান ঘটে।