সেই রিকশাচালক সুরুজকে পুরস্কৃত করল ওয়ালটন


এম এ লতিফ | Published: 2021-09-02 04:41:32 BdST | Updated: 2024-04-25 04:32:10 BdST

শখের ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ সুরুজ (সোহেল)। পেশায় রিকশাচালক। বোনের দেওয়া ওয়ালটনের একটি ফিচার ফোন তার ছবি তোলা ও সংরক্ষণের মাধ্যম। রিকশা চালাতে চালাতে কোনো দৃশ্য মনে ধরলে সেটির ছবি তুলে রাখেন তিনি।

এমনিভাবেই ছবি তুলতে গিয়ে আরেক দৃশ্যশিকারির সাবজেক্ট হয়ে যান। সংসদ ভবনের ছবি তোলার সময় সুরুজকে নিয়ে একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। দুই মিনিট সাত সেকেন্ডের ভিডিওটি মন ছুঁয়ে যায় নেটিজেনদের।

শখের ফটোগ্রাফার সেই ভাইরাল রিকশাচালককে পুরস্কৃত করেছেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম মুর্শেদ। ওয়ালটন এমডির কাছ থেকে পাওয়া বিশেষ উপহারের মধ্যে রয়েছে নগদ অর্থসহ সম্প্রতি বাজারে আসা ওয়ালটনের ফ্ল্যাগশিপ ফোন ‘প্রিমো জেডএক্সফোর’।

জানা গেছে, শখের ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ সুরুজ পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকার কামরাঙ্গিরচরে। রিকশার আয়েই চলে তার ৮ সদস্যের সংসার। ঘরে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে। বর্ণিল এ শহরের বিভিন্ন দৃশ্যের ছবি তুলতে ভালোবাসেন তিনি। সেসব ছবি সন্তানদের দেখান। সন্তানদের মুগ্ধতা ছুঁয়ে যায় তাকেও। শত অভাবের মাঝেও তার মুখের হাসি ফুরায় না।

সংসদ ভবনের ছবি তোলার সময় সুরুজের ভিডিওটি ধারণ করে ফেসবুকে আপলোড করেন মাজহারুল হক মুহাজির নামে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতার এক শিক্ষার্থী। তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ৩য় বর্ষে পড়ছেন। ভিডিওটি ফেসবুকে আপলোড হতেই তা ছড়িয়ে পড়ে অসংখ্য প্রোফাইলে। ওয়ালটন ফিচার ফোনের ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলোর ফ্রেমিংয়ের মুগ্ধ নেটিজেনরা। অনেকেই সুরুজের কম্পোজিশনের প্রশংসা করছেন। অনেকেই তাকে আখ্যায়িত করেছেন ‘একজন সুখী ফটোগ্রাফার’ হিসেবে। একটি স্মার্টফোন পেলে তার ফটোগ্রাফির শখ যে আরো পূর্ণতা পাবে, সেটাও উল্লেখ করেন অনেকেই।

ভিডিওটি নজরে আসে ওয়ালটন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মুর্শেদের। তিনি ওয়ালটন ফোনের ওই গ্রাহককে খুঁজে বের করে পুরস্কৃত করার দায়িত্ব দেন ব্র্যান্ড ম্যানেজার জীবন আহমেদকে। ওয়ালটনের আরেক কর্মকর্তা বিধান হালদারের মাধ্যমে ভিডিও আপলোডকারীর কাছেই ভাইরাল রিকশাচালকের খোঁজ পায় ওয়ালটন।

বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরায় ওয়ালটন করপোরেট অফিসে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ওয়ালটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার হাতে বিশেষ উপহার তুলে দেন।

সেসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের চিফ মার্কেটিং অফিসার ফিরোজ আলম, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আদনান আফজাল, ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর মাহবুব-উল হাসান, ভিডিও আপলোডকারী মাজহারুল হক মুহাজির প্রমুখ।

ওয়ালটন হাই-টেকের এমডি গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘মোহাম্মদ সুরুজ ওয়ালটনের একজন সম্মানিত গ্রাহক। তার ফটোগ্রাফির শখ পূরণের উপলক্ষ্য হতে পেরে আমরা আনন্দিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে যারা সবার কাছে তুলে ধরেছেন, আমি তাদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। মোহাম্মদ সুরুজের মতো মানুষেরা আছেন বলেই ওয়ালটন আজ সবার পছন্দের ব্র্যান্ড হতে পেরেছে।’

রিকশাচালক মোহাম্মদ সুরুজ (সোহেল) জানান, ১৮ বছর ধরে তিনি ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছেন। নিজের ছবি তোলার শখ পূরণে একটি স্মার্ট ফোন কিনতে পারেননি। বোনের দেওয়া ফোনটিই ছিলো তার সম্বল। ওয়ালটনের এমডি তাকে কোম্পানির সবচেয়ে দামি স্মার্টফোনটি উপহার দিয়েছেন। এই ফোনটি তার এবং সন্তানদের অনেক দিনের স্বপ্ন পূরণ করলো। তাছাড়া ওয়ালটনের এমডির দেওয়া নগদ অর্থ তার পরিবারকে সহায়তা করবে।