বই না পড়ে দায়িত্বশীলরাও অপপ্রচারে নামছেন: শিক্ষামন্ত্রী


Desk report | Published: 2023-02-10 05:17:52 BdST | Updated: 2024-03-29 00:40:42 BdST

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন যারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের কারিকুলাম পড়ায় না, তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে পাঠ্যবই নিয়ে মিথ্যাচার করছে, অপপ্রচার চালাচ্ছে, ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করছে এবং হুমুক দিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও এই অপপ্রচারের অংশ হয়ে যাচ্ছেন, বইগুলো না পড়ে অপপ্রচারে নামছেন, কিন্তু মিথ্যাচার, অপপ্রচার দিয়ে আমাদের অগ্রযাত্রাকে নিশ্চয় বন্ধ করা যাবে না।’

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) আশুলিয়ায় ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী।

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ভারতের হিমাচল প্রদেশের শুলিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও উপাচার্য অধ্যাপক অতুল খোসলা। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ‘বানর থেকে মানুষের সৃষ্টি’ এমন গুজব তৈরির প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘চিহ্নিত গোষ্ঠী, যাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, কিন্তু তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমাদের শিক্ষাক্রমের বইগুলো পড়ানো হয় না। তারা ব্যাপকভাবে এই বইগুলো নিয়ে অপপ্রচারে নামেন। যেখানে বইতে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে— মানুষ বানর থেকে হয়নি, সেখানে তারা বলছেন— বইতে নাকি আমরা বলেছি, বানর থেকে মানুষ হয়েছে। এই মিথ্যাচার, অপপ্রচার কেন? আরও যা যা বলেছে, তার প্রত্যেকটির জবাব আছে। কোনও ছবি,কনটেন্ট নিয়ে যদি কারও আপত্তি থাকে, এমনকি অস্বস্তি থাকলেও আমরা তা বিবেচনায় নেবো। যেভাবে কদর্য ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে, তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে করছেন। যারা মন্দ কাজ করছে তাদের উদ্দেশ্য মন্দ, পথ মন্দ। আমরা নিশ্চয়ই থেমে থাকবো না। ভালো কাজ যা করার তা করবো। আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে আনন্দের সঙ্গে শিখতে পারে, বয়স অনুযায়ী সঠিক জিনিস শিখতে পারে। মিথ্যাচার, অপপ্রচার দিয়ে আমাদের অগ্রযাত্রাকে নিশ্চয় বন্ধ করা যাবে না। দায়িত্বশীলরাও বইগুলো না পড়ে অপপ্রচারে নামছেন, মহান সংসদে দাঁড়িয়েও কেউ কেউ মিথ্যাচারের অংশ হয়ে যাচ্ছেন। এটি দুঃখজনক, লজ্জাজনক। এসব অপ্রচারগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করবার আগে সত্যটা যাচাই করে নিন। বইগুলো ওয়েবসাইটে আছে, আপনার বাড়ির পাশে স্কুল আছে।’

সমবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন এই কারিকুলামটি শুরু হলো যখন, তখন আমরা দেখলাম— শিক্ষক, শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া। বইগুলোর মধ্যে ভুল থাকতে পারে। আমরা বলেছি— ভুল থাকলে চিহ্নিত হলে সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন হবে। আমরা যখনই ভুল পাচ্ছি তখনই সংশোধন করে দিচ্ছি। কিন্তু আমরা দেখলাম, একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী, যাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, কিন্তু তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমাদের শিক্ষাক্রমের বইগুলো পড়ানো হয় না, তারা ব্যাপকভাবে এই বইগুলো নিয়ে অপপ্রচারে নামলেন। আমি আবারও বলছি। কিন্তু যে বিষয় বইয়ে নেই যে বিষয় যেভাবে নেই, যে কথা বইতে বলা হয়নি, যে ছবি আমার বইতে নেই, মিথ্যাচার করে ফটোশপ করে, এডিট করে সেগুলো বইয়ের অংশ বলে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। অপপ্রচার চালাবার পাশাপাশি লেখক, শিক্ষক, যেসব শিক্ষাবিদ-বিশেষজ্ঞরা জড়িত ছিলেন, আমরা যারা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি, আমাদের কদর্য ভাষায়, কুতসিৎভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে এবং হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’

//