করোনায় শিক্ষাখাতে ক্ষতির পাশাপাশি প্রাপ্তিও রয়েছে: শিক্ষামন্ত্রী


Desk report | Published: 2023-05-17 02:27:20 BdST | Updated: 2024-03-28 20:56:07 BdST

করোনা মহামারিকালে দেশের শিক্ষাখাতে ক্ষতির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধির মতো প্রাপ্তিও রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, করোনাকালে বেশ ক্ষতি হয়েছে তা অনস্বীকার্য। তবে তা আমাদের একার নয়, সারাবিশ্বেরই হয়েছে। আমরা তা পূরণে কাজ করে যাচ্ছি।

মঙ্গলবার (১৬ মে) রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

করোনাকালে শিখনক্ষতি ও শিখনঘাটতি বিষয়ক গবেষণা ফল প্রকাশ উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আমাদের হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিপরীতে আশাবাদী হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত পথে আমরা স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

করোনায় ক্ষতির পাশাপাশি প্রাপ্তিও রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অনেক শিক্ষার্থী নতুন নতুন জিনিস শিখেছে। মন্ত্রণালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, এই সময়ে অনেকের সৃজনশীলতাও বেড়েছে। শিক্ষার্থীদের নিজে নিজে শেখার ক্ষমতা বেড়েছে। মহামারিতে হারানোর মতো পাওয়ারও বিষয় ছিল। অনেক যেমন হারিয়েছি, তেমন নতুন কিছু পেয়েছিও।

লকডাউনে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো স্মরণ করিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনাকালে শিক্ষকরা অনলাইনকেন্দ্রিক নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন। তারা প্রশিক্ষণের সুযোগও পাননি। এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে করতে তারা শিখেছেন। আমরা মাত্র ১০ দিনের প্রস্তুতিতে টেলিভিশনে ক্লাস করা শুরু করেছি। করোনার স্থায়িত্ব ও পরিণতির বিষয়ে আমরা জানতাম না। তাই স্বল্পসময়ে আমরা টেলিভিশন, অনলাইন, রেডিওতে কাজ শুরু করেছি। এখানে শিক্ষকসহ এ সংশ্লিষ্ট সকলে অনেক সহযোগিতা করেছেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসব উদ্যোগ গ্রহণের পর নিজস্ব জরিপে দেখলাম, আমরা ৬৪ থেকে ৬৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীদের কাছে যেতে পারছিলাম না। পরে আমরা অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করলাম। এতে দেখা গেল আমরা ৯৪ থেকে ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি।

শিক্ষায় বরাদ্দের বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষাখাতে বাজেটের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এই খাতে জিডিপি ৬ শতাংশ বাজেট দেওয়ার কথা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আমাদের এখানে বর্তমানে তা ৩ শতাংশ আছে। তবে শতাংশের হিসেবে কম হলেও টাকার অংকে তা কম নয়। বিএনপি-জামায়াত সরকারের ২০০৬ সালে সবমিলিয়ে বাজেট ছিল ৬০ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। সেখানে শুধুমাত্র শিক্ষাতেই বর্তমানে আমরা তার থেকে বেশি পাচ্ছি।

শিক্ষাক্ষেত্রে সক্ষমতা বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, টাকার পাশাপাশি তা ব্যবহার করার সক্ষমতাও প্রয়োজন। এটি ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। শিক্ষক নিয়োগে মান রক্ষার বিষয়ে নজর দেওয়া হচ্ছে। অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে এবং এটি চলমান প্রক্রিয়ায় আছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

এ সময় শিক্ষার্থীদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতার প্রশংসা করে শিক্ষামন্ত্রী এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান মেলায় উপস্থাপিত পেজেন্টেশনের কথা উল্লেখ করেন।

জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোলেমান খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহমেদ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি চার্লস হোয়াইট এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

//