মানুষ নাক ডাকে কেন? সমাধান কী?


Dhaka | Published: 2021-01-14 14:36:38 BdST | Updated: 2024-03-29 19:18:50 BdST

নাক ডাকা একটি প্রচলিত সমস্যা। কিন্তু এই সমস্যা কেন হয়? এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মনিলাল আইচ লিটু। বর্তমানে তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের নাক কান গলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : মানুষ নাক ডাকে কেন? বা এর শব্দ এত জোরে হয় কেন?

উত্তর : যেসব লোকজন মোটা তাদের মধ্যে নাক ডাকার হার অনেক বেশি। উইন্সটন চার্চিলের নাম শুনেছেন। উনি নাক ডাকতেন ১৪০ ডেসিবেলে। যেখানে একটি জেড ইঞ্জিন শব্দ করে ১৩০ ডেসিবেল। শব্দটা হওয়ার কারণ হলো যখন সে বাতাস নেওয়ার চেষ্টা করেন প্রচণ্ড বেগে ভেতরে নেগেটিভ সাকশন হয়, তখন ফ্যারিংসে জিহ্বার বেজসহ এক ধরনের কম্পন হয়। এর জন্য এই শব্দটা তৈরি হয়। নাক বাঁকা থাকলে অথবা ফ্যারিংসে কোনো টিউমার থাকলে, অথবা ফ্যারিংস যদি কলাপস করে, ওজনের কারণে অথবা অনেকের অন্য রকম অভ্যাস থাকে যেমন মদ্যপান, ধূমপান এসব কারণে সমস্যা হয়। আমরা প্রতিদিন যদি একই সময় ঘুমাতে যাই তাহলে ভালো হয়।

আমাদের কিন্তু এসব ধারণা নেই যে আমাদের ঘুমেরও একটি হাইজিন আছে। আমরা টিভি চালিয়ে দিয়ে ঘুমাতে থাকি। অথবা চারদিকে শব্দ হচ্ছে সে রকম অবস্থায় আমরা ঘুমাই। এগুলো না করলে ঘুম ভালো হয়। স্লিপ হাইজিন যদি আমরা মেনে চলি, তাহলে এটা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

আপনি যেটি বলছিলেন যে এর ক্ষতিকর দিক- সেটা তো অনেক। যেমন নাক ডাকলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে। ঘুমের মধ্যে মৃত্যুর মতো সমস্যা হতে পারে। রক্তচাপ বাড়ার বড় একটি কারণ হিসেবে স্লিপ এপনিয়া বলা হয়। কারণ ফুসফুসে যখন অক্সিজেন কমে যায়, তখন হার্ট চাপটা বাড়িয়ে দেয়। চাপটা বাড়লে তাকে টিকে থাকার জন্য একটি চাপ রাখতে হয়। কাজেই উচ্চ রক্তচাপ হলো একটি বড় কারণ। ডায়াবেটিসও এর সঙ্গে সম্পর্কিত। এসব লোকের সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে।

মেলবোর্নের এপোআর্থ স্লিপ সেন্টারে গিয়ে দেখলাম, যে ব্যক্তি নাক ডাকবেন তিনি কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করতে পারবেন না। অথবা উনি যন্ত্রপাতি সামলাতে পারবেন না। যদি কোনো ব্যক্তির রুটিন টেস্টের সময় তাঁর স্লিপ এপনিয়া ধরা পড়ে, তাহলে ওই ব্যক্তির লাইসেন্স নিয়ে নেওয়া হয়। কারণ, উনি যেকোনো মুহূর্তেই দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।

প্রশ্ন : এর সমাধান কী।

উত্তর : এর সমাধান হলো ওজন কমাতে হবে। ধূমপান, মদ্যপান এসব বাজে অভ্যাস থেকে দূরে থাকতে হবে। আপনার স্লিপ হাইজেন মেনে চলতে হবে। ব্যায়াম করতে হবে। মধ্যম মানের খাবার খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। তাঁকে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে হবে। বিশেষ করে তিনি যদি ওজন নিয়ন্ত্রণে আনেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্লিপ এপনিয়া ভালো হয়ে যায়।

ভালো না হলে তাঁর সার্জিক্যাল চিকিৎসা আছে। এর সব চিকিৎসা এখন আমাদের দেশেই হচ্ছে।

//