ধীরগতির ফ্রি ওয়াইফাই, বিরক্ত জবি শিক্ষার্থীরা


jun correspondent | Published: 2022-05-21 08:56:37 BdST | Updated: 2024-03-29 15:24:59 BdST

বিশ্বায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিসর বাড়াতে ২০১২ সালে পুরো ক্যাম্পাসকে ওয়াইফাই (ইন্টারনেট) সংযোগের আওতায় নিয়ে আসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সংযোগ দেওয়ার ১০ বছর পরও সুফল পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। কচ্ছপগতির কারণে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এ নিয়ে চরম বিরক্তি প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।

অপ্রতুল ও ধীরগতির ইন্টারনেট ব্যবস্থার কারণে এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ইন্টারনেট সেবার বাইরে। এত বছরেও ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ক্যাম্পাসের ওয়াইফাইয়ের গতি ধীর হওয়ায় প্রায়ই প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ঢুকতে অতিরিক্ত সময় লেগে যায়। ছোটোখাটো ফাইল ডাউনলোডেও অনেক সময় লাগে। ব্যবহারের সময় বারবার ওয়াইফাই সংযোগ বিচ্ছিন্নও হয়ে যায়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আবাসিক সুবিধা না থাকায় দীর্ঘসময় ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হয় তাদের। তাই সকাল-দুপুর, কিংবা অন্য যেকোনো সময় ওয়াইফাই দিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে হয়। কিন্তু ব্যবহারের চেষ্টা করলেই সাইট অতিরিক্ত সময় নিয়ে লোডিং দেখায়। বন্ধের দিনে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম থাকে, তখনও ইন্টারনেটের গতি তেমন ভালো থাকে না বলে অভিযোগ করেন তারা। এছাড়া জবির কম্পিউটার ল্যাবগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেও ধীরগতির কারণে সেখানেও পর্যাপ্ত নেট সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না।

জানা যায়, ২০১২ সাল থেকেই জবিতে ওয়াইফাই সংযোগ ছিল। তবে ২০১৮ সালে নতুন করে বিডিরেন নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টারনেট সংযোগ নেয় জবি প্রশাসন। সেসময় পুরো ক্যাম্পাসকে শক্তিশালী ইন্টারনেট ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করে ৭০০ এমবিপিএস গতির ওয়াইফাই চালু করা হয়।

শিক্ষার্থীরা বলেন, মোবাইল ডাটা কিনে ল্যাপটপ চালানো অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য তাদের কারো কারো মাসে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর পক্ষে ডাটা কিনে ইন্টারনেট থেকে পড়াশোনা করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ই-লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়ছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, পুরো ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই থাকলেও বাস্তবে তা শিক্ষার্থীদের কোনো কাজে আসে না। ক্যাম্পাসের ওয়াইফাইয়ে সহজে সংযোগ পাওয়া যায় না। কখনো সংযোগ করা গেলেও তা দিয়ে কাজ করা যায় না। ধীরগতির ফলে অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষাকার্যক্রমের জন্যে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ডাটা কিনতে হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহাত হোসেন বলেন, কোর্সের ব্যবহারিক কাজের জন্যে আমাদের ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হয়। মোবাইল ডাটা কিনে কাজ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। ক্যাম্পাসের ওয়াইফাই আমাদের কোনো কাজেই আসে না। কখনো সংযোগ করলে তা দিয়ে কোনো ওয়েবসাইটে সহজে সাইন-ইন করা যায় না। নেটওয়ার্ক বাফার করে।

ইন্টারনেট (ওয়াইফাই) সংযোগের সমস্যা নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্য বলেন, দুই-একদিনের মধ্যে আমাদের একটা টিম আসবে। ইন্টারনেট প্রোভাইডার বিডিরেনের সঙ্গে কথা হয়েছে। যেসব জায়গায় নেটওয়ার্ক সংযোগ পায় না, সেখানে স্টেশন বা সংযোগ দেওয়া হবে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমেদ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অবস্থা তাতে টুকটাক সংকট থাকবেই। সমস্যা সমাধান করতে কমিটি করা হয়েছে, আগে তো ছিলই না। আমাদের এখানে একটা সাবস্টেশন করা হবে, সেটা বসানো হলে ইন্টারনেটের সমস্যাটা থাকবে না।

//