এবার ঠিকাদারের সঙ্গে ইবি রেজিস্ট্রারের কথোপকথন ফাঁস


IU Correspondent | Published: 2023-03-16 14:06:06 BdST | Updated: 2024-04-20 16:19:51 BdST

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য আবদুস সালামের পর এবার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের কথোপকথনের এক অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তাতে এক ঠিকাদারের সঙ্গে কথোপকথন শোনা যাচ্ছে। তবে এই কথোপকথনকে কণ্ঠসদৃশ বলছেন রেজিস্ট্রার। এ ব্যাপারে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ‘সাথী খাতুন’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে কয়েকটি কল রেকর্ডের ২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের একটি অডিও পোস্ট করা হয়। অডিও ক্লিপটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানকে মঈন নামে এক ঠিকাদারের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায়।

অডিও ক্লিপটিতে কথোপকথনে ঠিকাদারকে ব্যাংক থেকে টাকা ওঠানোর বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায়। অডিওতে চারটি ফোনালাপ সংযুক্ত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রথম কল রেকর্ডে ওই ঠিকাদার বলেন, ‘স্যার আজকে ওটা জমা দিয়ে দিলাম কালকে ওই টাকাটা ক্যাশ হবে। তো টাকাটা কোথায়, কখন প্রেস করব আমাকে বললে আমি সেইভাবে প্রিপারেশন নিয়ে নিতাম।’ এ সময় আলী হাসান তিনটার সময় কুষ্টিয়া এসে টাকা দিতে বলেন। এরপর ঠিকাদার বলেন, “টোটাল ৪ লাখ টাকাই আমি সাড়ে চারটার মধ্যে আমি পাব, সাড়ে ৫টার মধ্যে আমি আপনাকে দিতে পারব।” এ সময় রেজিস্ট্রার বলেন, ‘ফোনে এগুলো বলার দরকার নাই।’

দ্বিতীয় ফোনালাপে ঠিকাদার রেজিস্ট্রারকে বলেন, ‘ওটা (টাকা) ৪টার দিকে মনে হয় পাবেন।’ তখন তিনি আবার অর্থ লেনদেনের বিষয়টি ফোনে না বলার ব্যাপারে সতর্ক করেন। এ ছাড়া তৃতীয় ফোনালাপে টাকার বিষয়ে কাজ হয়েছে কি না, এ বিষয়ে ঠিকাদারকে জিজ্ঞেস করেন রেজিস্ট্রার। তখন ঠিকাদার জানান, তিনি এখনো ব্যাংকে আছেন, কাজ শেষ হলেই তাঁকে (রেজিস্ট্রার) জানাবেন।

আরেকটি ফোনালাপে রেজিস্ট্রার ঠিকাদারের কাছে টাকার অবস্থা এবং আর কতক্ষণ লাগবে তা জানতে চান। এ সময় ঠিকাদার আরও আধা ঘণ্টার মতো লাগবে বলে রেজিস্ট্রারকে কোথাও বসে চা খেয়ে একটু অপেক্ষা করতে বলেন। এ সময় ব্যাংক বন্ধ হওয়ার সময় হয়ে যাচ্ছে বলে ঠিকাদারকে তাগিদ দেন রেজিস্ট্রার। পরে শেষ ফোনালাপে রেজিস্ট্রার ঠিকাদারের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনি অল্প একটু অপেক্ষা করেন, আসতেছি। ব্যাগে ভরতেছি (টাকা), প্লিজ একটু রাখেন।’

এদিকে বুধবার সকালে এই অডিও শোনার পর রেজিস্ট্রার থানায় জিডি করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমার কণ্ঠসদৃশ ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপটি শুনে আমি মনে করি, বিষয়টি এডিট করা হয়েছে। পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগে পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ও প্রকল্প পরিচালক পদে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন ঠিকাদারদের সঙ্গে প্রকল্প সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমাকে কথা বলতে হয়েছে। কিন্তু ভাইরাল হওয়া অডিওর বিষয়ে এ ধরনের কোনো আর্থিক লেনদেনের আলাপ পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ও প্রকল্প পরিচালক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগে থাকা অবস্থায় হয়নি। দরপত্রের প্রক্রিয়াগুলো প্রকৌশল অফিস থেকে সম্পন্ন হয়ে থাকে। ভবিষ্যতে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে কুচক্রী মহল এ ধরনের জঘন্য ঘটনার আরও প্রয়াস চালাতে পারে।’

ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘যে অডিও ক্লিপটি ভাইরাল হয়েছে, তা সুপার এডিট করা। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ বিষয়ে ইবি থানায় একটি জিডি করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এগুলো করা হচ্ছে।’ প্রথম আলো সূত্র