গায়ে ধাক্কা লাগার জেরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদার কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলে এ ঘটনা ঘটে।
শাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমানের সমর্থক মো. শিপন হাসান ও ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদা শুভর সঙ্গে ধাক্কা লাগার প্রেক্ষাপটে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিপন হাসান আহত হন। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
আহত মো. শিপন হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপরদিকে নাজমুল হুদা শুভ শাখা ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদা শুভ ক্যান্টিন থেকে খাবার নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার পথে খলিলুর রহমানের সমর্থক মো. শিপন হাসানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে শিপন ও নাজমুলের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে তারা হাতাহাতি ও মারামারিতে জড়ায়। খলিলুরের সমর্থক শিপন ক্যান্টিন থেকে বের হয়ে তার গ্রুপের নেতাকর্মীদের নিয়ে হলের নাজমুল হুদার কক্ষে গিয়ে ভাঙচুর করেন। এ সময় হলে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয় এবং উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর হল প্রভোস্ট এবং প্রক্টর এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদা শুভ বলেন, আমি ক্যান্টিন থেকে খাবার নিয়ে বের হচ্ছিলাম। তখন খলিলুর ভাইয়ের সমর্থক শিপনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তখন তিনি আমাকে হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এর কিছুক্ষণ পরে তার গ্রুপের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন ছেলে নিয়ে আমার কক্ষে ভাঙচুর চালায়। সেখানে জানালার কাচ এবং একটি সাউন্ড বক্স ভেঙে ফেলে। ক্যান্টিনের ঝামেলার পর আমার গ্রুপের সমর্থকদের সঙ্গে খলিল ভাইয়ের সমর্থকদের কোনো ঝামেলা হয়নি।
এরপর প্রভোস্ট বডি ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসেছিলেন হলে। তারা বিষয়টি আগামীকাল আলোচনা করে সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন। আমি এ নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছি প্রভোস্ট বরাবর।
এ বিষয়ে মো. শিপন হাসান বলেন, হলে নাজমুল হুদার সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি আমাকে প্রথম চড় মারেন এরপর তার সঙ্গে আমার হাতাহাতি হয়। এর একপর্যায়ে তিনি আমাকে কিল-ঘুষি দেন এবং হলের ক্যান্টিনের চেয়ার দিয়ে আঘাত করেন। এ সময় আমার মাথা, পীঠ এবং হাতে ব্যথা পাই। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, হলে ভাঙচুরের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাকে মারধর করার পর আমাকে মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে আমি এখানেই আছি।
শাহপরাণ হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট কৌশিক সাহা বলেন, আমরা ঘটনাটি জেনেছি। ঘটনাস্থলে এসে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করেছি। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। আমরা এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আগামীকাল জরুরি মিটিং ডেকেছি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনার পর পরই সেখানে যাই। আমাদের উপস্থিতিতে দুই পক্ষকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে এসেছি। এখন পরিবেশ শান্ত রয়েছে। হল কর্তৃপক্ষ সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে।