
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) সকল প্রকার ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও শহীদ আবরার ফাহাদের ৫ম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে নিরাপদ ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাসের দাবিতে বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের নিজস্ব ব্যানারে মৌন মিছিল ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে ওই কর্মসূচির শুরু হয়। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আবরার ফাহাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং তার হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মরণ সভা করে।
মিছিলটি ক্যাম্পাসের লাইব্রেরির সামনে থেকে শুরু হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে গিয়ে মুক্তমঞ্চের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক কৃষিবিদ মো. আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এ, এম, শোয়াইব, যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম তুষার, সদস্য মিজানুর রহমান ও ইসমাইল হোসেনসহ বিভিন্ন হলের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী।
স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, আবরার ফাহাদ ছিলেন দেশপ্রেমিক এবং মুক্ত চিন্তার একজন সাহসী কণ্ঠ। ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে এবং নিরাপদ গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাসের দাবিতে তার সংগ্রামকে স্মরণ করি। মিছিল ও সমাবেশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আবরার হত্যার ঘটনায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপদ ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানান।
বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কৃষিবিদ মো. আতিকুর রহমান বলেন, “১০১১ নম্বর রুমে শহীদ আবরার থাকতেন। ২০১৯ সালের ৭ই অক্টোবর, সেই ভয়াবহ রাতে তাকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ২০২১ নম্বর রুমে নিয়ে যায় এবং সেখানে নির্মমভাবে নির্যাতন করে, যার ফলে তার মৃত্যু হয়। তার অপরাধ কী ছিল? তার একমাত্র অপরাধ ছিল ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া। ধারণা করা হয়, সেখানে ভারত-বাংলাদেশের কিছু চুক্তি নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছিল। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৎকালীন সময়ে (২০১৪ সালে)সাদ হত্যা হয়েছে, রাব্বি হত্যা হয়েছে। কিন্তু কোনো হত্যার বিচার হয়নি। আমরা এসব হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৮ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনীতি, সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।