জাবিতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের 'মেডিকেল ঘেরাও' কর্মসূচি


জাবি প্রতিনিধি | Published: 2025-06-23 19:08:27 BdST | Updated: 2025-07-10 04:46:02 BdST

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চিকিৎসা কেন্দ্রের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে সংস্কারের দাবিতে ‘মেডিকেল ঘেরাও’ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে জড়ো হয়ে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এ সময় শুধুমাত্র জরুরি সেবা ছাড়া সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিতে গাফিলতির তদন্ত ও দায়ীদের অপসারণ, অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বৃদ্ধি, অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারী নিয়োগ, পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ, আধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সরঞ্জাম সংযোজন, ২৪ ঘণ্টা নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা, জরুরি বিভাগের মানোন্নয়ন, মেডিকেল সেন্টারকে পরিপূর্ণ চিকিৎসাকেন্দ্রে রূপান্তর, স্বাস্থ্যবিমা চালু করা।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জোবায়ের হোসাইনের মৃত্যুর পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের গাফিলতি রয়েছে। চিকিৎসাকেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় তিনি যথাসময়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেননি বলে দাবি করেন তারা।

ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ৫২তম ব্যাচের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম কায়েফ বলেন, ‘আমরা সবাই দেখেছি, কীভাবে জুবায়ের ভাই ঢাকা মেডিকেলের করিডরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়েছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স চেয়েও পাননি। এই ব্যর্থতা আমাদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলছে।’

৫২তম ব্যাচের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ওয়ারা তালহা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ করা হলেও শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে জরুরি যে চিকিৎসাকেন্দ্র—তার সংস্কার নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেই। ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাচীর মৃত্যুর পর আমরা যে কয়েকটি দাবি তুলেছিলাম, তার মধ্যে মেডিকেল সংস্কারের বিষয়টিও ছিল। কিন্তু এতদিনেও সেই দাবিগুলোর কোনো বাস্তবায়ন হয়নি।’

৫০তম ব্যাচের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, ‘মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত জনবল নেই। এমনকি ইসিজি মেশিন থাকলেও সেটি চালানোর জন্য প্রশিক্ষিত কেউ নেই। বছরজুড়ে সংস্কারের দাবি জানানো হলেও প্রশাসনের গড়িমসিতে কোনো অগ্রগতি হয়নি।’

উল্লেখ্য, রোববার সকালে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জোবায়ের হোসাইন। মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যা থেকে এই ঘেরাও কর্মসূচির সূচনা হয়।