রাবিতে স্থাপন করা হলো দেশের প্রথম ‘পোষ্য কোটার সমাধি’


RU Correspondent | Published: 2024-12-10 21:07:56 BdST | Updated: 2025-01-17 01:34:51 BdST

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্থাপন করা হলো পোষ্য কোটার সমাধি। ১৯৭৭ সালে চালু হওয়া এ কোটার সঙ্গে মিল রেখে ৭৭টি ইট দিয়ে তৈরি করা হলো সমাধিটি। কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে সমাধিটি স্থাপন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডের পাশে এই সমাধি স্থাপন করা হয়। সমাধি তৈরিতে কাজ করেছেন তিনজন মিস্ত্রি রাফি, মেহেদী হাসান ও উজ্জ্বল।

এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, বাংলাদেশের প্রথম অযৌক্তিক পোষ্য কোটার সমাধি আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডের পাশে স্থাপন করেছি। এখানে ৭৭টি ইট দিয়েছি। ১৯৭৭ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা চালু করেছিল তৎকালীন উপাচার্য তার সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। ১৯৭৭ সালের সেই বৈষম্যকে দূর করতে আমরা এখানে পোষ্য কোটার কবর দিয়ে সমাধি তৈরি করেছি। এটা প্যারিস রোডের পাশে হওয়ায় আসতে যেতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী দেখবেন। দেখে যদি তাদের বিবেকবোধে একটু বাধে তাহলে জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে নিজেরা নিজেদেরকে কোটা থেকে সরিয়ে নিবে। আর যদি উল্টো কোনো চিন্তা করে বা সমাধিতে আঘাত করা হয় তাহলে এর ফলাফল ভয়াবহ হবে।

এর আগে বিকেল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার মুক্তমঞ্চে ওপেন ডিবেটের আয়োজন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে কোটার পক্ষে থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের এসে যুক্তি উপস্থাপন করতে বলা হয়। তবে সেখানে শিক্ষার্থীরা থাকলেও শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত হননি। পরে তারা পোষ্য কোটা মৃত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন ও উপাচার্য ভবনের মাঝে প্যারিস রোডের পাশে পোষ্য কোটার কবর দেন। সেখানেই রাতে সমাধি স্থাপন করা হয় এবং আগামীকাল নতুন কর্মসূচি হিসেবে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি রাখা হয়েছে।

জুতা নিক্ষেপের মতো অশোভনীয় কর্মসূচি একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মর্যাদা এবং ভাবমূর্তির সঙ্গে যায় না উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে কোনো যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করতেই পারে। এটি তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু জুতা নিক্ষেপের মতো অশোভনীয় কর্মসূচি একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মর্যাদা এবং ভাবমূর্তির সঙ্গে যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আন্দোলনের কর্মসূচি কিংবা প্রতিবাদের ভাষা রুচিবোধ সম্পন্ন এবং মার্জিত হওয়া প্রয়োজন। আমি জুতা নিক্ষেপের মতো নিম্নমানের কর্মসূচি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে অনুরোধ রাখছি।