নাইজেরিয়ান তরুণী পেলেন ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ


ঢাকা | Published: 2021-05-04 01:14:21 BdST | Updated: 2024-03-29 05:10:07 BdST

উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে অনেকেই বৃত্তির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন। অনেকে ফলাফলের কারণে কয়েকটি বৃত্তি পেয়ে যান। নাইজেরিয়ার এক তরুণীও আবেদন করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন বৃত্তির জন্য। ১৭ বছর বয়সী ওই তরুণী বিশ্বের ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য বৃত্তি পেয়েছেন। বৃত্তির পরিমাণ ৫০ লাখ ডলার।

ভিক্টোরি ইনকা বানজো নামের ওই তরুণী বিপাকে পড়েছেন এত বৃত্তি পেয়ে। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার স্বনামধন্য বৃত্তিও পেয়েছেন তিনি। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন তিনি। কোন প্রতিষ্ঠানে পড়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়বেন, চিন্তা তা নিয়ে তাঁর।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উচ্চমাধ্যমিক পাস বানজোর মা চিকা ইনকা-বানজো লাগোস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক। বাবা আদিয়াঙ্কা বানজো বেসরকারি খাতের একটি সরবরাহ চেইনের নির্বাহী প্রধান। ভিক্টোরি ইনকা-বানজো বলেন, ‘এখন অবিশ্বাস্য লাগছে। আমি অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করেছিলাম। আসলে আমার ধারণা ছিল, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমি বৃত্তি পাব না।’

যুক্তরাষ্ট্রের আইভি লিগ স্কুল, ইয়েল কলেজ, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ভার্ড কলেজ, ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি), স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশিপ পেয়েছেন বানজো। এ ছাড়া কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেস্টার বি. পিয়ারসন স্কলারশিপ এবং ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্যারেন ম্যাককালিন আন্তর্জাতিক লিডার টোমুরো (কেমিলট) স্কলারশিপ। সব মিলিয়ে মোট ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশিপ পেয়েছেন তিনি।

ভিক্টোরি ইনকা বানজো বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভর্তি প্রক্রিয়ায় তারা সেরাদের বেছে নেয়। সুতরাং আপনি কল্পনা করতে পারেন, কীভাবে আমি প্রতিদিন নিজেকে স্মরণ করাই যে আমি এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুযোগ পেয়েছি।’

নাইজেরিয়ান বানজোর অর্জনের তালিকাও কম নয়। বিশ্বের যেসব দেশের দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজি, তাদের নিয়ে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত আন্তর্জাতিক সিআইই পরীক্ষায় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি। শীর্ষস্থান দখল করেছেন তিনি। এ ছাড়া তিনি কেমব্রিজের আইজিসিএসই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, যেখানে সব কটি বিষয়েই ‘এ’ অর্জন করেছেন।

জীববিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছা আছে ভিক্টোরি ইনকা-বানজোর। তিনি বলেন, ‘গত বছরগুলোতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমার কঠোর পরিশ্রমকে স্বীকৃতি দিয়ে তারা আমাকে গর্বিত করেছে। ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করেছি, আমি তাদের (বিশ্ববিদ্যালয়) প্রাপ্য। এই স্কলারশিপ আমাকে আরও উঁচুতে দাঁড় করিয়েছে। তবে কোন প্রতিষ্ঠানে পড়ব, সেটা নিয়ে এখনো সন্দিহান। পছন্দের প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে এখনো ভাবছি। বিশেষ করে হার্ভার্ড, এমআইটি, স্ট্যানফোর্ড ও জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ বেশি।

বানজোর মা চিকা বানজো বলেন, তাঁর মেয়ের গল্পটি অন্য নাইজেরিয়ার তরুণ–তরুণীকে অনুপ্রাণিত করতে পারে। এটি লক্ষণীয় যে আমেরিকা-নাইজেরিয়ায় জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠার সুবিধার কারণে প্রায় শীর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান অনেকে। নাইজেরিয়ান-আমেরিকায় বেড়ে ওঠা হলেও নাইজেরিয়ায় বানজো মাধ্যমিকে পড়েছেন। তাঁর গল্পটি আমাদের দেশের যুবকদের অনুপ্রাণিত করতে পারে।

মেয়ের একাডেমিক সাফল্যের জন্য বাবার নির্দেশনা ও শৃঙ্খলাকে কৃতিত্ব দেন মা চিকা।

বানজো এখন ব্যস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি–ইচ্ছুকদের পড়ানোর কাজে। তিনি রেডিওর মাধ্যমে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের গণিত, ইংরেজি, জীববিজ্ঞান, রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো পড়াচ্ছেন।

//