তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর মাত্র ৩৪ শতাংশ পড়তে পারে: ইউনিসেফ


Desk report | Published: 2022-03-31 21:22:39 BdST | Updated: 2024-04-24 09:50:51 BdST

বাংলাদেশে তৃতীয় শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিশুদের মাত্র ৩৪ শতাংশ পড়তে পারে। এই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাত্র ১৮ শতাংশের গুনতে পারার প্রাথমিক দক্ষতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অবস্থা আরো খারাপ। বুধবার জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে গত এক বছরে স্কুল থেকে ঝরে পড়া এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া শিশুদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় পার্থক্যের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। গত এক বছরের মধ্যে স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিশুদের মাত্র ২৯ শতাংশের পড়তে পারার প্রাথমিক দক্ষতা রয়েছে, যেখানে স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া শিশুদের মধ্যে এই হার ৩৯ শতাংশ।

‘শিশুরা কি সত্যিই শিখছে?’ শীর্ষক ইউনিসেফের ওই প্রতিবেদনে শিশুদের ওপর কভিড-১৯ মহামারি এবং স্কুল বন্ধ থাকার প্রভাব সম্পর্কে বিভিন্ন দেশের জাতীয় পর্যায়ের উপাত্ত এবং একই সঙ্গে মহামারির আগের সময় শিশুদের শিক্ষার অবস্থা কেমন ছিল তা নিয়ে হালনাগাদ বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত দুই বছরে বৈশ্বিকভাবে সশরীরে স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রমের দুই ট্রিলিয়ন ঘণ্টা নষ্ট হয়েছে।

যেসব দেশের উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে, সেসব দেশে শেখার বর্তমান গতি এতটাই ধীর যে বেশির ভাগ স্কুলগামী শিশুর পড়তে-শিখতে সাত বছর লাগতে পারে, যে দক্ষতা সাধারণত দুই বছরেই অর্জন করা যায়।

ইউনিসেফ বলেছে, বাংলাদেশে স্কুল বন্ধ থাকায় প্রায় তিন কোটি ৭০ লাখ শিশুর শুধু শিক্ষাই ব্যাহত হয়নি, এ কারণে তাদের পড়তে ও গুনতে পারার প্রাথমিক দক্ষতার ঘাটতি উদ্বেগজনক মাত্রায় বেড়েছে। যদিও এই ঘাটতি মহামারির আগেও ছিল।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, মহামারির আগেও বাংলাদেশের শিশুরা পড়াশোনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছিল। মহামারির কারণে বাংলাদেশের শিশুদের পড়াশোনায় যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে তাদের জন্য প্রতিকারমূলক শিক্ষাপ্রাপ্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে তা পরবর্তী প্রজন্মের শিশু ও তাদের পরিবারের সামগ্রিক কল্যাণকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, শিশুরা যখন তাদের শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে না, তখন তাদের শেখার ক্ষতি হয়। যখন তারা একেবারেই যোগাযোগ করতে পারে না, তখন তাদের শেখার ক্ষতি স্থায়ী হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রয়োজন একটি নতুন স্বাভাবিক পরিস্থিতি, শিশুদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনা এবং তাদের শেখার অবস্থা কী তা মূল্যায়ন করা। তারা যা হারিয়েছে তা পুনরুদ্ধার করার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় নিবিড় সহায়তা প্রদান এবং শিক্ষকরা যাতে তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা উপকরণ পায় তা নিশ্চিত করা। এগুলো করতে না পারলে অনেক বেশি ঝুঁকি তৈরি হবে। ’