মেসির দুর্দান্ত ফ্রি-কিক, দারুণ জয়ে ইতিহাস গড়ল মায়ামি


ডেস্ক নিউজ | Published: 2025-06-20 11:18:42 BdST | Updated: 2025-07-10 04:33:31 BdST
ম্যাচের ৫৩ মিনিটের খেলা চলছে। স্কোরলাইন তখন ১-১ সমতায়। আটলান্টার মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ৩২ হাজার দর্শকের অধিকাংশের মুখে ‘মেসি-মেসি’ স্লোগান। এমন সময় বক্সের বাইরে আর্জেন্টাইন মহাতারকাকে ফাউল করে বসেন রদ্রিগো মোরা।
 
এমন জায়গা থেকে এর আগে মুড়ি-মুড়কির মতো গোল করেছেন মেসি। এবারও সুযোগটা হাতছাড়া করলেন না। পোর্তোর মানবদেয়ালের ওপর দিয়ে বল ভাসালেন, জালে বল জড়ালেন ডান কোনার ওপরের অংশ দিয়ে। দিক বুঝে লাফিয়েছিলেন পোর্তো গোলকিপার ক্লদিও রামোস। কিন্তু মেসির বাঁকানো ফ্রি-কিক ঠেকানোর সাধ্য ছিল না ৩৩ বছর বয়সী এ গোলকিপারের।
 
শেষ পর্যন্ত মেসির এ জাদুকরী ফ্রি-কিকটাই ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দেয়। তাতে ২-১ গোলের স্বস্তির জয়ে মাঠ ছাড়ে মায়ামি।
 
ক্লাব বিশ্বকাপে এবারই প্রথম সুযোগ পাওয়া মায়ামির টুর্নামেন্টে এটাই প্রথম জয়। এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মিশরের ক্লাব আল আহলির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে হাভিয়ের মাচেরানোর দল। পোর্তোর বিপক্ষে ম্যাচটা মায়ামির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এ জন্য যে, এই প্রথম মেসিরা ইউরোপের কোনো ক্লাবের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে খেললেন।
 
মেসি থাকার পরও যুক্তরাষ্ট্রের লিগের একটা ক্লাব ইউরোপিয়ান ক্লাবের সঙ্গে - যারা আবার ২০০৪ চ্যাম্পিয়নস লিগও জিতেছে - কেমন করে, তা নিয়ে আগ্রহ ছিল। সব প্রশ্নের উত্তর মিলল একটাই শব্দে - মেসি!
 
শুধু মায়ামির বা আমেরিকারই নয়, ওই অঞ্চলেরই ক্লাবগুলোর জন্য নতুন ইতিহাস তৈরি করেছেন মেসি। উত্তর ও মধ্য আমেরিকা অঞ্চলের (কনক্যাকাফ) ক্লাবগুলোর মধ্যে মায়ামিই প্রথম, সারা প্রতিযোগিতামূলক কোনো ম্যাচে হারাল ইউরোপের কোনো ক্লাবকে।
 
গতকাল পোর্তোর বিপক্ষে শুরুটা যে ভালো হয়েছিল, এমন নয়। ম্যাচের ৮ম মিনিটে পেনাল্টিতে গোল খেয়ে যায় মায়ামি। পঞ্চম মিনিটে পোর্তোর পর্তুগিজ মিডফিল্ডার জোয়াও মারিওকে বক্সের ভেতর ফাউল করেছিলেন নোয়াহ অ্যালেন। লম্বা সময় নিয়ে ভিএআর যাচাইয়ের পর পোর্তোর পক্ষে রায় দেন রেফারি। সে স্পটকিক থেকে পর্তুগিজ ক্লাবটিকে এগিয়ে দেন সামু ওমরদিওন।
 
শুরুতে গোল পেয়ে উজ্জীবিত পোর্তো আরও বেশি দাপট নিয়ে খেলতে থাকে। মায়ামি অবশ্য প্রথমার্ধে তেমন কিছু করতে পারেনি। তবে মেসি দুটি দারুণ  সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন। সতীর্থদের ব্যর্থতায় আর্জেন্টাইন অধিনায়কের নামের পাশে অ্যাসিস্ট যোগ হয়নি।
 
১-০ গোলে পিছিয়ে বিরতিতে যাওয়া মায়ামি দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোলের দেখা পায়। ৪৭ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে মার্সেলো ওয়েগান্তের ক্রসে দারুণ এক ভলিতে মায়ামিকে সমতায় ফেরান সেগোভিয়া। এর ৭ মিনিট পর মেসির সেই জাদুকরী গোল। তাতে পূর্ণাঙ্গ ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে মায়ামি।
 
ক্যারিয়ারে এটি ছিল মেসির ৬৮তম ফ্রি-কিক গোল। আর মায়ামির জার্সিতে এ নিয়ে ৫০বার গোল উদযাপন করলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। এমএলএসের ক্লাবটির হয়ে ৬১তম ম্যাচে এসে এ মাইলফলক ছুঁলেন মেসি। এর আগে বার্সেলোনার জার্সিতে এ কীর্তি ছুঁতে মেসির লেগেছিল ১১৯ ম্যাচ। আর জাতীয় দলের হয়ে ১০৭তম ম্যাচে ৫০ গোল স্পর্শ করেন মেসি।
 
মেসি ম্যাজিকে পাওয়া গতকালের  জয়ে ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে মায়ামি। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে পালমেইরাস। আর সমান ১ পয়েন্ট নিয়ে পরের দুটি স্থানে যথাক্রমে পোর্তো ও আল আহলি। পরের ম্যাচে পালমেইরাসের সঙ্গে ড্র করলেই মায়ামির পরের রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত, হারলেও নানা হিসাব মিললে সুযোগ থাকবে।