শাবিতে পুরোনো রূপে ফিরছে টং দোকান


SUST Correspondent | Published: 2022-05-28 21:04:10 BdST | Updated: 2024-04-24 04:19:56 BdST

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) আবারো পুরোনো রূপে ফিরছে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়া টং দোকান। দীর্ঘদিন পর এসব টং দোকান স্থাপন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বাকি টং দোকানগুলোও দ্রুত স্থাপনের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

এর আগে করোনা মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের টং দোকানগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে সেগুলোর অবকাঠামো নষ্ঠ হয়ে যাওয়ায় সেসময় সেগুলো উচ্ছেদ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক ফুড কোর্ট করে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে টং দোকান পুনরায় চালুর জন্য আন্দোলন করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও পালন করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসেন শিক্ষার্থীরা।

পরবর্তীতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল টং দোকান বন্ধ করে দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ‘চাষাভুষার টং’ নামে একটি খাবারের দোকান স্থাপন করেন। এই আন্দোলনের সূত্র ধরেই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পূর্বে উচ্ছেদকৃত টং পুনরায় স্থাপনের দাবি জানান।

এরপর শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের সামনে এবং হলের সামনে মোট ৯টি টং দোকান স্থাপন করে দেওয়ার আশ্বাস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে একাডেমিক ভবন- বি এর পাশে শিক্ষার্থীদের স্থাপনকৃত চাষাভুষার টংসহ মোট দুইটি টং, একাডেমিক ভবন- ই এর সামনে চারটি, একাডেমিক ভবন- সি এর পাশে দুইটি এবং শাহপরাণ হলের সামনে একটি টং স্থাপন করার কথা রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের স্থাপনকৃত চাষাভুষার টং ছাড়াও ইতোমধ্যে একাডেমিক ভবন- ই এর সামনে চারটিসহ মোট পাঁচটি টং দোকান স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও টং দোকান ফিরে আসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে উচ্ছ্বাস। তারা বলছেন- টং দোকান আবারও ফিরে আসায় শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে বসে গল্প, আড্ডা এবং আগের মতো বিভিন্ন সাংস্কৃতিক চর্চা চালিয়ে যেতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও মুক্ত সাংস্কৃতিক চর্চা ফিরে আসবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাবরিনা শাহরীন রশীদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও টং দোকান ফিরে এসেছে দেখে আমরা আনন্দিত। দোকানগুলো উচ্ছেদ হওয়ায় যারা কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন তাদের আবারো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে দেখে ভালো লাগছে। সেই সঙ্গে করোনা মহামারির এ দীর্ঘ সময়ে তাদের যে ক্ষতি হয়েছে এর মাধ্যমে তারা আস্তে আস্তে একটু হলেও ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টং দোকান উচ্ছেদ করে দেওয়ার পর থেকেই আমাদের দাবি ছিল এসব দোকান পুনরায় স্থাপন করা হোক। যাতে এসব টং কেন্দ্রীক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে আড্ডা, সাংস্কৃতিক এবং মুক্ত চিন্তা চর্চার ধারা ফিরে আসে। আমাদের দাবি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব টং দোকান পুনরায় স্থাপন শুরু করেছে। আমরা আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্বের মতো আবারো এসব টং কেন্দ্রীক শিক্ষার্থীদের সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা ফিরে আসবে।

পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আমেনা বেগম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও টং ফিরে এসেছে দেখে ভালো লাগছে। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মোট নয়টি টং স্থাপন করে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো সবগুলো টং পুনরায় স্থাপন করা হয়নি। আমাদের দাবি অনুযায়ী একাডেমিক ভবন- ই এর সামনে চারটি টং স্থাপিত হলেও একাডেমিক ভবন- সি এর সামনে দুটি, একাডেমিক ভবন- বি এর সামনে আরও একটি এবং শাহপরাণ হলের সামনে একটি টং এখনো স্থাপিত হয়নি। আমরা আশা করছি আমাদের বাকি টং দোকানগুলোও খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্থাপনের উদ্যোগ নেবে।