তীব্র তাপদাহে গাছতলায় ক্লাস নিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক


Abul Khair Jajid | Published: 2024-05-01 18:39:45 BdST | Updated: 2024-05-17 10:10:18 BdST

তীব্র তাপদাহে আর লোডশেডিং এর কারণে ক্লাসে যখন বসাই যায় না তখন শিক্ষার্থীদের গাছতলায় ক্লাস নিচ্ছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুরের শিক্ষক। এই ব্যতিক্রম উদ্যোগটি নিয়েছে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক।

আজ বুধবার (১ মে) সকাল ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার পাশে লাল সোনাইল গাছে নিচে এ চিত্র দেখা গেছে। এতে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই ৭৫ একর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০০ প্রজাতির প্রায় সাড়ে তিন হাজার গাছ রয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি জায়গায় গাছের শীতল হাওয়া বয়ে যায় এই তীব্র তাপদাহের মাঝেও ।

আরো জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কি.মি. দূরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বর্তমান সময়ে লোডশেডিং আর তীব্র তাপদাহে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে যেতে চায় না। বিভিন্ন সময় ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে যায়।

এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শিক্ষক শেখ মাজেদুল হক বলেন, এই অত্যধিক গরমে চার দেওয়ালের যান্ত্রিক ক্লাসরুমের মধ্যে প্রতিনিয়ত ক্লাস করতে মনের মধ্যে একঘেয়েমি একটা অনুভূতি কাজ করে। প্রানবন্ত , ইন্টারাকটিব ক্লাস শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি।

তাই বেরোবির সবুজ সুশীতল ছায়াতলে প্রকৃতির মাঝে স্ট্যাটিস্টিক্স ইন বিজনেস কোর্সের একটা চমৎকার ক্লাস উপহার দেয়ার চেষ্টা করি। এটা একটা ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে বলে আমার বিশ্বাস।

শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, আজ এক নতুন অভিজ্ঞতা হলো, এই তীব্র গরমে সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাসে মনোরম পরিবেশে গাছের ছায়ায় ক্লাস নেন শেখ মাজেদুল হক স্যার। রংপুর শহরে অত্যধিক গরম হলেও শহরের পাশেই বেরোবি ক্যাম্পাসে গরম শহরের তুলনায় অনেকটা কম। সকাল ৮:৩০ মিনিট থেকে টানা ৩ ঘন্টা ক্লাস নেন গাছের নিচে প্রকৃতির মাঝে।এই কের্সের শেষ ক্লাস ছিলো এটি।ক্লাস শেষে আমাদের সবাইকে আইসক্রিম খাওয়ান স্যার।এবং শেয়ার করেন তার জীবনের সফলতার গল্প।

অনুপ্রেরণা যোগান সামনে এগিয়ে যাওয়ার।পাখির ডাক,এই গরমেও কখনো বাতাস,স্যারের অসাধারণ ক্লাস, এবং ক্লাস শেষে স্যারসহ সুর মিলিয়ে গানের আড্ডা স্বরনীয় হয়ে থাকবে।ধন্যবাদ জানাতে চাই শেখ মাজেদুল হক স্যারকে।

শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বর্ষা বলেন, আমরা গরমের কারণে ক্লাসে বসতে পারি না। বিদ্যুৎ তো থাকেই না। অনেকে গরম সহ্য করতে না পেরে কলেজে আসে না আবার আসলেও চলে যায়। গাছ তলায় ক্লাস করলে এতটা গরম লাগে না।

আরেক শিক্ষার্থী সাজেদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বিদ্যুতের অবস্থা খুবই নাজেহাল, ক্লাসে বসলে আমরা বিদ্যুৎ পাইনা যার কারনে গরম লাগে। কিন্তু আমাদের ক্যাম্পাসে প্রায় ৩৬ হাজার গাছ থাকায় আমরা ক্যাম্পাসে অনায়াসে শীতল পরিবেশ পাই। আমরা ক্লাসরুমে ক্লাস না করে ক্যাম্পাসের যেকোনো জায়গায় বসে ক্লাস করতে পারি। ক্যাম্পাসে প্রচুর গাছ থাকায় আমরা এই সুবিধা পাচ্ছি।