ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসির দুর্নীতি তদন্তে কমিটি


ঢাকা | Published: 2024-02-24 11:32:20 BdST | Updated: 2024-07-27 08:07:06 BdST

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইএইউ) প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুর কমিশন (ইউজিসি)। 

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. হাসিনা খানকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফজলুর রহমান, অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপ-পরিচালক মো. এমদাদুল হক ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী খান।

ইউজিসির চিঠিতে বলা হয়েছে, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অপকর্ম, অনিয়ম, চাঁদাবাজি, অর্থ-আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গত নভেম্বর মাসে অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন খাতের দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়। ৯৭ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে মো. আশ্রাফ উদ্দিন তামিম নামে একজন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা সচিবের কাছে তথ্য-প্রমাণসহ প্রো-ভিসির নানা অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

ইউজিসিতে জমা পড়া অভিযোগে বলা হয়েছে, আবুল কালাম আজাদ মাদ্রাসায় পরিদর্শন, অধিভুক্তি, প্রাথমিক পাঠদান, নবায়ন, তদন্ত, নিয়োগ প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণসহ নানা কাজে গেছেন। তিনি মাদ্রাসা অধিভুক্তি ও নবায়নে পরিদর্শনে গেলে গড় হিসেবে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নেন। আর প্রাথমিক পাঠদানের অনুমোদনের জন্য গেলে সেই টাকা গিয়ে দাঁড়ায় এক থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত। মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল-ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগে প্রতিনিধি হিসেবে গেলেও তাকে এক লাখ টাকার নিচে দিলে নেন না। এছাড়া তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও টিএ/ডিএ নেন। তিনি গত বছরের জুন মাসেই শুধু টিএ/ডিএ খাতে ২ লাখ ৫০ হাজার ১৬৮ টাকা নিয়েছেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, তিনি নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ২০০ লিটার পর্যন্ত জ্বালানি তেল ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু তিনি অনেক মাসেই ৩৫০ থেকে ৪০০ লিটার পর্যন্ত জ্বালানি তেল নেন। তার বাসা থেকে অফিসের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার হলেও তিনি তা দেখান ১৫০ কিলোমিটার। এ ব্যাপারে তার ড্রাইভারকে শোকজও করা হয়েছে। এ ছাড়া তার জন্য বরাদ্দ করা ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৩-৫৩১৬ গাড়ি থাকার পরও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবাস প্রায় সময়ই ব্যবহার করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ড. আবুল কালাম আজাদ বিভিন্ন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, ভাইস-প্রিন্সিপালসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগে প্রতিনিধি হিসেবে নিজেই নিজের নামে চিঠি ইস্যু করেন। বরিশালের বাঘিয়া আল আমিন কামিল মাদ্রাসায় প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগে বড় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সেখান থেকে তিনি বড় অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের খোশবাজার ছালেহিয়া দারুচ্চুন্নাত কামিল মাদ্রাসার নিয়োগ প্রতিনিধি হিসেবে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি ঢাকায় কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগসাজশে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে তিনি ওই মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেন। পটুয়াখালীর দুমকী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডি অনুমোদন নিয়ে মামলা থাকার পরও তিনি তা অনুমোদন দেন। রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার পাইকান আকবরিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসা পরিদর্শনে নিজেই নিজের চিঠি অনুমোদন করেন। এমনকি নিজেই আবার নিজের টিএ/ডিএ বিল অনুমোদন করেন।