সর্বজনীন পেনশন বিষয়ক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি ইবি শাপলা ফোরামের


Shakib Aslam | Published: 2024-05-18 22:46:47 BdST | Updated: 2024-07-27 11:12:05 BdST

 ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষদের অন্তর্ভুক্ত করে প্রচারিত সর্বজনীন পেনশন বিষয়ক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে বিবৃতি প্রদান করেছে।

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ রবিউল হোসেন বিবৃতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৩ মার্চ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত একটি প্রজ্ঞাপন (এস.আর.ও. নং-৪৭-আইন/২০২৪, তারিখ: ২৬ ফাল্গুন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ/১০ মার্চ, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ) শাপলা ফোরামের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ ধরনের স্পষ্টতঃ বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজ যারপরনাই হতাশ ও সংক্ষুব্ধ। প্রচলিত পেনশন ব্যবস্থা স্থগিত করে সর্বজনীন নাম দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কেবল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে বিশেষ বৈষম্যমূলক পেনশন চালু করার তীব্র বিরোধিতা করছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম।

এছড়াও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও জ্ঞান-সৃজন কেন্দ্র। সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত একপেশে নীতি প্রবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ে একই সঙ্গে নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টির পরিবেশ বাধাগ্রস্থ করবে এবং মেধাবীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দিতে নিরুৎসাহিত মর্মে শাপলা ফোরাম মনে করে। তাছাড়া ঘোষিত প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকসমাজ একদিকে যেমন আর্থিকভাবে ভীষণ ক্ষতিগ্রন্থ হবে অন্যদিকে এ পেশা থেকে মেধাবীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। এজন্য শাপলা ফোরাম এ ধরনের বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের জোর দাবি জানাচ্ছে।

এ বিষয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রবিউল হোসেন বলেন, এমনিতেই বর্তমানে শিক্ষার্থীরা কিন্তু শিক্ষকতা পেশাসহ গবেষণামুখী না হয়ে বিসিএস সহ অন্যান্য সেক্টরে আগ্রহ বাড়াচ্ছে। ফলে আমরা আশংকা করছিযে এ পেশায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে। আমদের দরকার হচ্ছে ইন্সটিটিউট, ল্যাবরেটরি যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে পড়বে, জ্ঞান তৈরি করবে। যার মাধ্যমে আমরা আধুনিক সমাজ গড়ে তুলতে পারবো। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও সব সরকারি অর্থায়নে চলে। কিন্তু যখন এই পেনশন ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে যাবো তখন বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরাই কিন্তু শিক্ষকতা পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য পেশায় চলে যাবে।

সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রচলিত পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে কখনো অসন্তোষ প্রকাশ করেনি। অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীনে পেনশনের অন্তর্ভুক্ত তো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাড়াও আরও অনেক পেশা অন্তর্ভুক্ত আছে তাহলে তাদের বাদ দিয়ে শুধুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই আওতায় আনা হলো এইটা আমাদের কাছে উদ্দেশ্যপূর্ণ মনে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দুই ধরনের পেনশন ব্যবস্থা যদি চালু থাকে তাহলে শিক্ষকদের মধ্যে বড় ধরনের বৈষম্য তৈরি হবে। একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে এক শিক্ষক পাবে একধরনের পেনশন আরেক শিক্ষক পাবে আরেক ধরনের পেনশন এটি একি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা শিক্ষকদের মধ্যে অন্তকলহ ও অন্তঃদ্বন্ধ সৃষ্টি করবে। এর মাধ্যমে মেধাবী যারা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহী তাদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ফলে তারা শিক্ষকতা পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।