প্রথমবারের মতো জবির ৪৭ মেধাবী শিক্ষার্থী পাবেন ‘স্বর্ণখচিত ডিনস অ্যাওয়ার্ড’


Desk report | Published: 2024-05-21 19:38:18 BdST | Updated: 2024-07-27 15:21:36 BdST

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) স্নাতকে বিশেষ কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলকারী শিক্ষার্থীদের প্রথমবারের মতো স্বর্ণখচিত ‘ডিনস অ্যাওয়ার্ড’ দেয়া হবে। দেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হলেও এতদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ অ্যাওয়ার্ডের প্রচলন ছিল না। এবারই প্রথম চালু হচ্ছে এই অ্যাওয়ার্ড।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদভুক্ত সব বিভাগগুলোর চার বছর মেয়াদি স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সর্বোচ্চ মেধাবীদের এ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হবে। ডিনস অ্যাওয়ার্ড হিসেবে এই মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে একটি সার্টিফিকেট এবং স্বর্ণপদক। যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে এবার ৪৭ জন শিক্ষার্থী পাচ্ছেন এ অ্যাওয়ার্ড। প্রথমবারের মতো এবার ২০১৬-১৭ (১২তম ব্যাচ) ও ২০১৭-১৮( ১৩তম ব্যাচ) এই দুই শিক্ষাবর্ষ মিলিয়ে কলা অনুষদ থেকে নয়জন, বিজ্ঞান অনুষদ থেকে ছয়জন, বিজনেস স্টাডিজ থেকে আটজন, সামজিক বিজ্ঞান অনুষদ থেকে সাতজন, আইন অনুষদ থেকে দুইজন, লাইফ অ্যান্ড আর্থ সাইন্স অনুষদ থেকে তেরো জন এবং চারুকলা অনুষদ থেকে দুইজনকে দেওয়া হবে এ অ্যাওয়ার্ড। মঙ্গলবার (২১ মে) রেজিস্ট্রার দপ্তরসূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সময় নির্ধারন করা না হলেও জুনের মাঝামাঝি বা জুলাইতে অনুষ্ঠান আয়োজন হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্বস্ত সূত্র।

ডিনস অ্যাওয়ার্ড বিষয়ে কমিটির আহ্বায়ক এবং বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান বলেন, ডিনস অ্যাওয়ার্ড সম্পর্কে বারবার মিটিং করে সর্বশেষ বিভাগগুলো থেকে রেজাল্টসহ তালিকা পাঠানো হয়। সেসব তথ্যের প্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত তালিকা করতে পেরেছি। এবার ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪৭ শিক্ষার্থীকে এ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সব অনুষদের আওতাধীন প্রতিটি বিভাগ থেকে স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনকারী একজন করে শিক্ষার্থী এ অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হবেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হবে। এ অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হতে হলে স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষায় ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৭৫ থাকতে হবে। একই বিভাগে একাধিক শিক্ষার্থী সমান সিজিপিএ অর্জন করলে, তাদের প্রথম থেকে অষ্টম সেমিস্টার পর্যন্ত প্রাপ্ত মোট নম্বর বিবেচনা করা হবে। এরপরও সমতা থাকলে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল বিবেচনা করে চূড়ান্ত প্রার্থী মনোনয়ন পাবেন।

এছাড়াও প্রতিটি বিভাগের সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনকারী শিক্ষার্থী এ অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে শর্ত হিসেবে স্নাতক শ্রেণির কোনো সেমিস্টারে রিটেক ও পুনঃভর্তি থাকতে পারবেন না। কোনো কোর্সে মানোন্নয়ন ও সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থাকতে পারবেন না। কোনো সেমিস্টার পরীক্ষায় এক বা একাধিক কোর্সে ‘এফ’ গ্রেড থাকা যাবে না। এছাড়া প্রতিটি সেমিস্টারে শতকরা ৮০ ভাগ উপস্থিতিসহ স্নাতক অধ্যায়ন কালে কোনো প্রকার আর্থিক, অ্যাকাডেমিক অথবা শৃঙ্খলা বিষয়ক শাস্তিপ্রাপ্ত হওয়া যাবে না।

অ্যাওয়ার্ড সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলো করেছি, যাতে এ পুরস্কারের মাধ্যমে তাদের মধ্যে সাহসের জায়গা তৈরি হয় এবং সবাই অনুপ্রাণিত হয়ে ভালো ফলাফল করে।

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার ডিনদের সঙ্গে মিটিং করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য সবসময় কাজ করতে চাই। ডিনস অ্যাওয়ার্ড চালুর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফলে মনোনিবেশ করবে। খুব দ্রুত আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে চূড়ান্ত তালিকা করা শিক্ষার্থীদের মাঝে এ পুরস্কার দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ডিনস অ্যাওয়ার্ড চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় ডিনস অ্যাওয়ার্ডের নীতিমালাটি অনুমোদিত হয়।