রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার


টাইমস অনলাইনঃ | Published: 2017-09-30 03:28:08 BdST | Updated: 2024-05-13 15:35:21 BdST

নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর লাশ পাওয়া গেছে বুড়িগঙ্গা নদীতে।

সামসুল আলম সিয়াম নামের ১৫ বছর বয়সী ওই তরুণের লাশ বৃহস্পতিবার নদী থেকে উদ্ধারের পর শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে লক্ষ্মীপুরে তাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

সিয়ামের বাবা হারুনুর রশিদ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং মা ফাতেমা আক্তার শ্যামলী টিবি হাসপাতালে চাকরি করেন। তার বড় বোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।

মিরপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, স্কুলে যাওয়ার কথা বলে গত মঙ্গলবার মিরপুরের বাসা থেকে বেরিয়েছিল সিয়াম। কিন্তু পরে তার সন্ধান না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

এরপর বৃহস্পতিবার বিকালে পেস্তগোলা ব্রিজের নিচে বুড়িগঙ্গায় সিয়ামের লাশ ভেসে উঠলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ তা উদ্ধার করে।

দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, ছেলেটির লাশে পচন ধরেছিল। তার পরনে ছিল স্কুলের ইউনিফরম।

শুক্রবার মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে সিয়ামের লাশের ময়নাতদন্ত হলেও প্রতিবেদন না পাওয়ায় সিয়ামের মৃত্যুর কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ।

রেসিডেনসিয়াল মডেলের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া অধ্যক্ষ বলেন, সিয়াম এবার টার্ম পরীক্ষায় দুই বিষয়ে ফেল করে। যেদিন সে নিখোঁজ হয়, সেদিন তার বাবা-মা কলেজে এসে ক্লাস টিচার ও ভাইস প্রিন্সিপালের সঙ্গে দেখা করে গিয়েছিলেন।

এদিকে সিয়ামের পরিবারের অভিযোগ, কলেজের অংকের শিক্ষক হিসাব আলীর কাছে প্রাইভেট পড়া বাদ দেওয়ায় সিয়ামকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছিল। তবে তারা এ বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি।

সিয়ামের চাচা ওমর ফারুক বলেন, “অংকের শিক্ষক হিসাব আলী নানাভাবে অত্যাচার করছিল সিয়ামকে।কয়েক দিন আগে পরীক্ষা চলার সময় সে সিয়ামকে চড় মারে। পরে সিয়ামের বাবাকে ফোন করে স্কুল থেকে বহিষ্কার করানোর হুমকি দেয়।”

শিক্ষক হিসাব আলী বলেছেন, সিয়ামের পরিবারের ওই অভিযোগ মিথ্যা।

“সিয়াম টার্ম পরীক্ষায় দুই বিষয়ে ফেল করেছে, কীভাবে উন্নতি করা যায় সে বিষয়ে তার বাবার সাথে কথা বলেছি। মারধর বা গালমন্দ করা হয়নি।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নানও একই কথা বলেন।

“যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা ঠিক নয়। মারধরের কোনো ঘটনা এখানে ঘটেনি।”

 তিনি বলেন, সিয়াম যেদিন নিখোঁজ হয়, তার আগের দিন পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে তার বাবাকে ফোন করা হলে সিয়াম নিজেই ধরে এবং বাবা সেজে ভারী গলায় কথা বলে।

“বিষয়টি পরে জানাজানি হয়ে যায়। মঙ্গলবার সার্বিক বিষয়ে কথা বলার জন্য তার বাবা-মাকে আসতে বলা হয়।”

অধ্যক্ষ বলেন, মঙ্গলবার সকালে বাবা-মায়ের সঙ্গে সিয়ামেরও স্কুলে আসার কথা ছিল। কিন্তু বাবা-মাকে সে জানায় বন্ধুর সঙ্গে যাবে।

“আমরা পরে জেনেছি, এক বন্ধুর সাথে সে কলেজের গেইট পর্যন্ত এলেও ভেতরে ঢোকেনি। ওর বাবা-মা এসে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে যান। তারা বলেছিলেন, ছেলে কেন আসেনি তারা সেটা দেখবেন। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমরা লাশ উদ্ধারের খবর পাই।”

এমএসএল