চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন সিএনজি ও অটোরিকশা চালকেরা। ক্যাম্পাস ও এর আশপাশের এলাকায় রিকশা ভাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচগুণ নিচ্ছেন তাঁরা। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় রিকশাচালকেরা এই নৈরাজ্যের সুযোগ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্যাম্পাসের কলার ঝুপড়ি, দ্বিতীয় কলা ভবন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, জিরো পয়েন্টসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় অবস্থান করে বাড়তি ভাড়া আদায়ের এই চিত্র দেখা গেছে।
এর আগে বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথমবর্ষের চট্টগ্রাম বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনুষ্ঠিত হয়। কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ অধিভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৯০ শতাংশ। এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ ইউনিটের পৃথক পরীক্ষা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে অংশ নিচ্ছে ২২ হাজার ৭৪৭ জন পরীক্ষার্থী।
সরেজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা নির্ধারিত হলেও রিকশাচালকরা ভাড়া চাচ্ছেন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। নতুন কলা ভবন থেকে শহীদ আবদুর রব হল পর্যন্ত আসা-যাওয়ার ভাড়া ২০ টাকা হলেও নেওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেইট থেকে স্টেশন আসতে সিএনজিতে ৬ টাকা ভাড়া নির্ধারিত হলেও সেখানে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছেন চালকেরা। এ ছাড়া ক্যাম্পাস ছাড়া যেকোনো জায়গায় যেতে হলে আগের তুলনায় দিগুণেরও বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
ভর্তিচ্ছু ও তাঁদের অভিভাবকরা বাধ্য হয়েই রিকশা বা অটোরিকশায় বাড়তি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করছেন ক্যাম্পাসে। ভাড়া নিয়ে দরকষাকষি করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না।
মেয়েকে ভর্তি পরীক্ষা দিতে নিয়ে আসা একজন অভিভাবক বলেন, ‘সকালে কলা ঝুপড়ি থেকে একটা রিকশা নিয়ে দ্বিতীয় কলাভবনে যাই। এরপর ভাড়া জিজ্ঞেস করলে ৫০ টাকা দাবি করেন। আমরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা তেমন ভালোভাবে চিনি না। তাই বাধ্য হয়েই বাড়তি ভাড়া দিয়ে ক্যাম্পাসে যেতে হচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারি বা ভাড়ার তালিকা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় টানিয়ে দিলে আমাদের জন্য সুবিধা হতো।’
২০ টাকার ভাড়া ১৫০ টাকা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সুলাইমান নামের এক রিকশাচালক বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার কারণে রাস্তায় ভিড় বেশি। তাই ১৫০ টাকা চেয়েছি।
শিক্ষার্থীদের কাছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম মুরাদ বলেন, ‘আমাদের গার্ডদের বলা আছে। যেখানেই এরকম ভাড়া নিয়ে অসঙ্গতি দেখা যাবে তাঁদের যাতে আটকে রাখে। এরপর আমরা গিয়ে বিষয়টি দেখব। বাড়তি ভাড়া নেয়ার কোনো নিয়ম নাই।’