দুর্নীতিবাজ জাবি ভিসিকে রক্ষায় হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ: ভিপি নুর


টাইমস ডেস্ক | Published: 2019-11-06 08:39:55 BdST | Updated: 2024-04-29 05:27:02 BdST

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভিসি ফারজানা ইসলামকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, দুর্নীতিবাজ জাবি ভিসিকে রক্ষা করার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ।

মঙ্গলবার (০৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাবি ক্যাম্পাসে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে জাবি ভিসির অপসারণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ করেন ভিপি নুরসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ থেকে জাবি ভিসি ফারজানা ইসলামের অপসারণ ও হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন তারা।

মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়। এতে শিক্ষার্থীদের স্লোগান ছিল ‘দুর্নীতিবাজের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’, ‘জাবিতে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ছাত্রলীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘যেই হাত মানুষ মারে, সেই হাত ভেঙে দাও’, ‘দুর্নীতিবাজ ভিসি, ছাড়াতে হবে জাবি’ ইত্যাদি।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, এমন কোনো আন্দোলন সংগ্রাম নাই যেখানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়নি। গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছিল। আজকে একইভাবে জাহাঙ্গীরনগরের দুর্নীতিবাজ ভিসিকে রক্ষা করার জন্য তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলার সঙ্গে জড়িতদেরকে অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ সময় তিনি জাহাঙ্গীরনগরের ভিসি ফারজানা ইসলামকে দুর্নীতির দায়ে অপসারণের দাবি জানান।

এর আগে অনির্দিষ্টকালের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ দুপুর আড়াইটার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও সিন্ডিকেট সচিব রহিমা কানিজ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার পরপরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দুর্নীতির অভিযোগে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন চলছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলকারীর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালিয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলায় আট জন শিক্ষকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে আন্দোলনরতদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হামলা চলাকালে উপাচার্যের বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশকে নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। এছাড়া উপাচার্যপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের 'ধর ধর', 'জবাই কর' স্লোগান দিয়ে হামলায় উসকানি দিতে দেখা গেছে।

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘প্রথমে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের একটি দল আন্দোলনরতদের ওপর হামলার চেষ্টা চালায়। এতে তারা ব্যর্থ হয়ে ছাত্রলীগ পাঠায়। ছাত্রলীগ এসে ন্যাক্কারজনকভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হামলা করে। এতে অনেকেই আহত হয়। আমরা এই হামলার নিন্দা জানাই। বলপ্রয়োগ করে কোনও প্রশাসন টিকে থাকতে পারে না। হামলাবাজ উপাচার্যকে দ্রুত সরিয়ে নিতে সরকারের কাছে দাবি জানাই।'

টিআর/ ০৫ নভেম্বর ২০১৯