ঢাবির হলে হলে চলছে 'শিবির' নিধন


এম এম শাহীন | Published: 2017-08-13 18:59:46 BdST | Updated: 2024-05-12 15:06:52 BdST

সিলেটের শাহজালালের ছাত্রলীগের দুই নেতাকর্মীকে মারধরের পর ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকিরের প্রকাশ্য ঘোষণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে চলছে শিবির নিধন কর্মসূচী। ঢাবির প্রতিটি হলে প্রতি রাতেই শিক্ষার্থীদের ডেকে জেড়া করছে হলশাখা ছাত্রলীগ, জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেক্ষেত্রে যাদের সন্দেহ হচ্ছে তাদেরকেই প্রহার করে পুলিশে দেয়া হচ্ছে অথবা মেডিকেলে ভর্তি করা হচ্ছে। এমতবাস্থায় প্রথম, ২য় ও ৩য় বর্ষের সাধারণ ও নিরীহ শিক্ষার্থীরাই বেশি মারধরের শিকার হচ্ছে। 

গত কয়েকদিনে এফ রহমান, এসএম হল, জিয়া হল এবং সূর্যসেন হল থেকে বিভিন্ন বর্ষের ১০ জন ছাত্রকে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে হল শাখা ছাত্রলীগ। এদের বেশিভাগ শিক্ষার্থীকেই ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেয়া বা শেয়ার করাকেই কেন্দ্র করে সন্দেহ করা হয়েছে।

তবে অনেকসময় শিবির কিনা নিশ্চিত না হয়েই অনেককে মারা হচ্ছে। এরকমই একটি ঘটনা ঘটেছে জিয়া হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে। শিবির সন্দেহে এক ছাত্রকে পিটিয়ে রক্তাক্ত হল ছাত্রলীগ। কিন্তু পরে তারা জানতে পারে ওই ছাত্র শিবিরের কেউ নন। আহতের ছাত্রের নাম মনিরুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইউসুফ উদ্দীন খানের অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটায়৷ মনিরুল ইসলামের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তার পড়াশোনার খরচ চালান বলে জানা গেছে৷ 

এদিকে আটক অনেকেই শিবির করে বলে নিশ্চিত হয়েছে ছাত্রলীগ হল শাখার নেতারা। 

ছাত্রলীগের এসব কর্মকাণ্ডে কোনধরণের বাধা দিচ্ছেনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল কর্তৃপক্ষ। আর যেসব ছাত্ররা সমস্যায় পরছে তাদেরকেও সহায়তা করা হচ্ছেনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, অপরাধ করেছে শিবির আর সমস্যায় পরতে হচ্ছে আমাদের। হয় শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হউক অন্যথায় বিশ্বজিতের মত আমাদেরদেরও শিবির করার অপবাধ শুনে কবে যেন মারা যেতে হয়। 

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, আমাদের অবস্থান শিবিরের বিরুদ্ধে। কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীকে হয়রানি করা নয়। কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর করা হলে ছাড় দেওয়া হবে না।

প্রসঙ্গত,গত ৭ আগস্ট সিলেটের জালালাবাদে দুর্বৃত্তের হামলায় ছাত্রলীগের দুই কর্মী মারাত্মক আহত হন।এদের মধ্যে কুপিয়ে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলার পর মদনমোহন কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী সিলেট সদর উপজেলার পীরপুর টুকেরবাজারের শাহীন আহমেদের হাত কেটে ফেলতে হয়।এ ঘটনার জন্য শিবিরকে দায়ী করেছে ছাত্রলীগ।আর ৯ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সমাবেশে শিবিরের বিরুদ্ধে ‘অ্যাটাকে’ যেতে নির্দেশ দেন সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।তাদের নির্দেশনার পর বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র গিয়াস উদ্দিনকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয় ছাত্রলীগকর্মীরা।এর আগে সিলেটের ঘটনার পর পর লক্ষ্মীপুরে দুই শিবির কর্মী এবং ৮ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলে শিবিরের ১২ নেতাকর্মীকে পিটিয়ে পুলিশে দেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা।

এমএসএল