জয়-লেখকের দায়িত্বের ১ বছর পূর্তি, কতটা অগ্রগতি?


Dhaka | Published: 2020-09-15 03:25:32 BdST | Updated: 2024-04-27 21:32:33 BdST

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের দায়িত্ব পালনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ সোমবার ১৪ সেপ্টেম্বর।

গত বছরের আজকের এই দিনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। তবে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ জোড়ালোভাবে অস্বীকার করেছেন গোলাম রব্বানী।

এদিকে দায়িত্ব পালনের এক বছরে নতুনভাবে কোন কমিটি কিংবা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাদের জেলাভিত্তিক দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে পারেনি জয়-লেখক বিষয়টি নিয়ে হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। তবে তারা বলছেন, লকডাউন এর কারণে তাদের কাজে ততটা গতি পায়নি কিন্তু এখন থেকে তারা সাংগঠনিক কাজগুলো শুরু করবেন।

ছাত্রলীগ নেতাদের যেসব দাবি

  • কেন্দ্রীয় কমিটির খালি পদ পূরণ করা
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রলীগের কমিটি দেয়া 
  • যেসব জেলায় কমিটি নেই সেসব জেলার কমিটি 
  • যেসব বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের সম্মেলন হয়েছে সেখানে কমিটি দেয়া
  • যেসব জেলার কমিটির একাধিক বছর পূর্ণ হয়েছে সেখানে সম্মেলন করে কমিটি দেয়া

দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্ন জেলায় নানান ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছিল । বিভিন্ন জায়গায় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ায় নিয়মিতভাবে বহিষ্কার হয়েছে ছাত্রলীগের এক ডজনেরও বেশি নেতা-কর্মী।

এছাড়া দায়িত্ব নেয়ার পর সবচেয়ে বড় ঝামেলা সামলাতে হয়েছে জয় লেখককে। বুয়েটে আবরার হত্যাকাণ্ডে উত্তাল হয়ে গিয়েছিল ছাত্ররাজনীতি। সে সময় দায়িত্ব পালন করেছেন তারা।

ছাত্রলীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জয় এবং লেখক এখনো পর্যন্ত সাংগঠনিক কোন কাজে হাত দিতে পারেনি এমনকি ছাত্রলীগে নতুন কোন গতি সঞ্চার করতে পারেনি। তারা ছাত্রলীগের জয় এবং লেখককে পরামর্শ দিয়ে বলেন, সাংগঠনিক কাজ অতি দ্রুত শুরু করতে হবে।

শোভন-রাব্বানী প্রদত্ত ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে পরবর্তীতে ৫৬ জনকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি থেকে অবসর দেয়া হয়। সেসব পদেও এখনো পর্যন্ত নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে পারেনি জয় এবং লেখক । কবে নাগাদ এসব পদ পূরণ হবে তাও জানেনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটের ছাত্রলীগের কমিটি না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের গতিশীলতা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। অতি দ্রুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর কমিটি দিতে পারলেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে একটি গতি সঞ্চার করতে পারবেন।

তবে জয়-লেখক আগস্ট মাসে শোক দিবস উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচি পালন করেছেন কিন্তু ছাত্রলীগের যে একটি করে সভা হওয়ার কথা সেটি অনুষ্ঠিত করতে পারেননি।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জয় ও লেখক

এদিকে নিজেদের পদ হারানো নিয়ে গোলাম রাব্বানী তার ভেরিফাইড ফেইসবুক আইডিতে লিখেছেন, 

একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিবাজ ভিসি, আর দুর্নীতি-অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পরা তার পিএস ও পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে মিথ্যা অভিযোগ আর ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে বিশ্বের বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে কলঙ্কিত করা, লাখোলাখো নেতা-কর্মীর জীবন অনিশ্চয়তার ঠেলে দেয়ার বর্ষপূর্তি আজ!

'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' শিরোনামে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন, সেখানে ভিসির ইন্দনে নির্লজ্জ হামলা-মামলা, রাঁতের আঁধারে শিক্ষকদের বাসায় গিয়ে হুকমি, শিক্ষকদের পক্ষ থেকে শতাধিক পৃষ্ঠার তথ্য-প্রমাণাদি মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া, মিডিয়ায় তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন.... অথচ আজ পর্যন্ত একটা নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি হলো নাহ!

দুদক, শিক্ষা মন্ত্রনালয়, ইউজিসি কোন কর্তৃপক্ষেরই মনে হলো না, এর একটা বিহিত হওয়া দরকার!

কাজ পাওয়া ৬ টি কোম্পানির কাছ থেকে জাহাঙ্গীরনগরের PD নাসির, ED হাবিব ও ভিসির পিএস সানোয়ারের মাধ্যমে নেয়া প্রায় ২৮-৩০ কোটি টাকা থেকে স্থানীয় ছাত্রলীগকে ম্যানেজ করতে ঈদ সেলামীর নামে ১ কোটি টাকা দেয়া হলো। যারা পেয়েছে, তারা স্বয়ং ভাগ পাওয়ার কথা স্বীকার করছে, কখন কোথায় কিভাবে পেয়েছে সেটাও বলেছে! অথচ সেই অর্থের উৎস সম্পর্কেও একটা তদন্ত হলো নাহ!

স্যালুট ম্যাম, 'ব্যক্তির চেয়ে সংগঠন বড়!' এই বহুল প্রচলিত কথাটি আপনি মিথ্যে প্রমাণ করে ছেড়েছেন! শুনলাম, এই করোনার মধ্যেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে, বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের রানিং সভাপতির মেয়েসহ আরো একজনকে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। সত্যি, আপনি অসীম ক্ষমতাধর! আবারো নতশির কুর্নিশ আপনাকে!!