আওয়ামী লীগ নূর হোসেনের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেছে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর।
তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ কর্মী নূর হোসেন জীবন দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে নূর হোসেনের খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গণতন্ত্র ধ্বংস করে বাংলার মহা-স্বৈরাচার কায়েম করেছে। ’
শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নূর এসব কথা বলেন।
ভিপি নূর বলেন, যেই স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন করতে গিয়ে নূর হোসেন শহীদ হয়েছিলেন, সেই স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছিল ঠিকই; কিন্তু গণতন্ত্র আর ফিরে আসেনি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে নূরের হত্যাকারীদের সঙ্গে আঁতাত করে তাদের বিরোধী দল বানিয়ে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে।
ভিপি নূর আরও বলেন, দেশে এখন একক রাজনীতি চলে। জবাবদিহির সব পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। মানুষ এখন আর ভোট দিতে পারে না। আওয়ামী লীগের জন্য এটা লজ্জা। নূর হোসেনের রক্তের সঙ্গে এটা বেইমানি।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, বিএনপি ১৯৯৬ সালে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কায়েম করেছিল।
কিন্তু সেই আওয়ামী লীগই আবার ক্ষমতার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে।
তিনি বলেন, এরপর জনগণের আবেদন উপেক্ষা করে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন করেছিল। আর ৩০ ডিসেম্বর মিড-নাইট ভোট করে বিশ্বের বুকে ভোট চুরির ইতিহাস গড়েছে। এটা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলনে যারা রক্ত দিয়েছে, তাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ আতাউল্লাহ, সদস্য সচিব ফরিদুল হক, শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আবদুর রহমান, সদস্য সচিব আরিফ শরিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সেনাশাসক এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লেখা স্লোগান নিয়ে মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন নূর হোসেন।
মিছিলটি রাজধানীর জিরো পয়েন্ট (বর্তমান শহীদ নূর হোসেন চত্বর) এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নূর হোসেন শহীদ হন। এরপর থেকে এই দিনটিকে বিভিন্ন নামে পালন করে আসছে রাজনৈতিক দলগুলো।