ছাত্রলীগের জরুরী সভায় হট্টগোল


ঢাকা | Published: 2021-03-16 05:52:25 BdST | Updated: 2024-04-29 02:01:59 BdST

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এক জরুরি সভায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের সাংগাঠনিক কার্যক্রম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার বিষয়ে এবং সম্মেলনের কথা আসতেই সভায় হট্টগোল শুরু হয়।

হট্টগোল পরবর্তীতে হাতাহাতিতে রুপ নেয় বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল ৪টার দিকে জরুরি সভাটি শুরু হয়।

সভায় উপস্থিত সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কথা বলছিলাম। আলোচনার একপর্যায়ে সম্মেলনের কথা ওঠে। সম্মেলনের কথা উঠলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক জানান, নেত্রী বললে তখন সম্মেলন হবে। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান ইমন তখন বলেন, আপনারা সবকিছুর প্রস্তুতি নিয়ে নেত্রীকে বলেন।

সে সময় সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান নোবেল ও আরিফুজ্জামান ইমরানের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হতে থাকে। পরবর্তীতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

ছাত্রলীগের উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হোসেন বলেন, সম্মেলন মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের প্রাণের দাবি। আমরা চাই অতিদ্রুত সম্মেলন হোক।

সভার হাতাহাতির বিষয়ে জানতে চাইলে রাকিবুল হাসান নোবেল বলেন, আমরা সকলে এক পরিবারের মতো। সাধারণ একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে; বড় তেমন কিছু হয়নি। জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে সম্মেলনের কথা আসার কারণে এ পরিস্থিতির উদ্ভব হয় বলে জানান তিনি।

সভা থেকে বের করে দেওয়ার কথাও জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোবেল বলেন, এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।

নেতারা বলেন, ছাত্রলীগের সভায় আলোচনা, সমালোচনা তো হবে। কিন্তু সেখানে তেড়ে আসার বিষয়টি অনুচিত।

সভায় সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম, রানা হামিদ, মো. মঈনুদ্দিন, সাইফ উদ্দিন বাবু, সৈয়দ আরিফ হোসেন, সোহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জাব্বার রাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তারা তা ধরেননি।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট আরিফ হোসেন ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ১৭ই মার্চ জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী এবং ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত আজকের প্রস্তুতিমূলক সভাটি বেশ প্রাণবন্ত ছিল। যদিও শুরুর দিকের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত ছিল। আমাদের বেশ আহত করে। তবে শুরুতেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মহোদয় ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলন প্রসঙ্গে কথা বলায় সবার জন্য উক্ত বিষয়ে কথা বলাটা কিছুটা সহজ হয়েছে। সম্মেলনের ব্যাপারে যে কয়জন কথা বলেছেন, সকলেই যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আমার প্রস্তাবনা ছিল, যেহেতু নির্বাহী সংসদ মেয়াদোত্তীর্ণ, তাই আপনারা আমাদের অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বিষয়টা অবহিত করুন। তারপর প্রিয় নেত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনারা কর্মপদ্ধতি ঠিক করুন। এক্ষেত্রে আমরা সকলেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। তৎক্ষণাৎ সদুত্তর না পেলেও আশা করি, খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মহোদয় কাঙ্ক্ষিত পদক্ষেপ নিবেন।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এক জরুরি সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য। সভায় ডাকসুর সাবেক এই সদস্য বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর আন্তর্জাতিক বিতর্ক উৎসব, বিজ্ঞান উৎসবসহ আরও বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করতে পারে এবং ২৫মার্চকে জাতিসংঘ যেন গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সেজন্য ছাত্রলীগ  জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির  কাছে স্মারকলিপি দিতে পারে।