সাংবাদিক নাজমুলের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে ব্যারিস্টার সুমনের রিট


Dhaka | Published: 2020-08-31 23:29:31 BdST | Updated: 2024-05-08 11:42:41 BdST

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামের বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্থস্বত্ব জালিয়াতির ঘটনায় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে বঙ্গবন্ধুর নামের বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্থস্বত্ব জালিয়াতির ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

রিটে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ এবং ওই সাংবাদিক ও তাঁর স্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

‘৩টি বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি করে ২০ কোটি টাকার অভিনব দুর্নীতি’ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন।

রিটের আবেদনের ওপর হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে শুনানি হতে পারে।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন বলেন, অবাক করা বিষয় হলো এই দুর্নীতি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামের বই দিয়ে। এটা কি সহ্য করা যায়? বঙ্গবন্ধুর নামের বই নিয়ে যদি দুর্নীতি হয় আর এই সরকার যদি বসে থাকে, তাহলে মানুষ সন্দেহ করবে।

সুমন বলেন, ‘তিনি (সাংবাদিক) এই বই বিক্রি করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে এবং বইটি ছাড় দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এই যে সাংবাদিকের নামে প্রায় ২০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ এটা অবশ্যই মন্ত্রণালয়ের লোকজনের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া কখনই সুযোগ হয়নি।’

আইনজীবী সুমন বলেন, এই সাংবাদিক একজন ভদ্রলোক, যিনি আরেকজনের বই অর্থাৎ কারা অধিদপ্তরের বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব এবং মেধাস্বত্ব চুরি করে আবার মন্ত্রণালয়ের কাছেই বিক্রি করে দিয়েছেন।

ব্যারিস্টার সুমন আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে নিজের দলের লোকদের ব্যাপারে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন- এ অবস্থায় এসে ওই সাংবাদিককে কেন এখনো ধরা হচ্ছে না?

রিটের বিবরণে জানা যায়, মুজিববর্ষে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’-এর জন্য যে আটটি বই কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে তার মধ্যে তিনটি বই নিয়েই জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠেছে সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের বিরুদ্ধে। ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং ‘৩০৫৩ দিন’ বই দুটির পাশাপাশি অধ্যাপক নাসরিন আহমদ সম্পাদিত ‘অমর শেখ রাসেল’ বইটিরও মেধাস্বত্ব চুরি করে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ নামের দুটি প্রকাশনা সংস্থার মালিক এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে সাংবাদিক নাজমুল হোসেন তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, “অনুগ্রহ করে কেউ বিভ্রান্তি ছড়াবেন না...জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড একটি গবেষণাধর্মী ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং বাংলাদেশ জেল- এর সাথে বঙ্গবন্ধুর সমগ্র কারাজীবন নিয়ে ‘৩০৫৩ দিন’ বই দুটির স্বত্ব জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের নামে। (কপিরাইট সংক্রান্ত কাগজপত্র আছে।) সমস্ত নিয়ম মেনেই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু বুক কর্ণারের জন্য বই সরবরাহ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এনিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।

(সকল বৈধ নথিপত্র আছে। কারও প্রয়োজন হলে বলবেন)”