ত্যাগের মহিমায় পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত


টাইমস প্রতিবেদক | Published: 2017-09-03 17:35:51 BdST | Updated: 2024-05-15 14:28:15 BdST

ত্যাগের মহিমা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশ ও উৎসবের আমেজে শনিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদের নামাজ ও পশু কোরবানির মধ্যদিয়ে পালন করেন তাদের অন্যতম প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব।

শনিবার (০২ সেপ্টেম্বর) সকাল আটটায় রাজধানী ঢাকায় প্রধান ঈদ জামাত জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের লাখো মানুষ উত্সব আমেজে সেখানে নামাজ আদায় করেন।

নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাতের ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন জাতীয় ঈদগাহের এ জামাতের আয়োজন করে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ঈদগাহে পৌঁছলে সিটি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন তাঁকে স্বাগত জানান। এ প্রধান জামাতে মহিলা ও বিদেশি কূটনীতিকদের নামাজ আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা ছিল। মুসুল্লিদের জন্য ওযু, খাবার পানি ও মোবাইল টয়লেটেরও ব্যবস্থা ছিল।

জাতীয় ঈদগাহে সুষ্ঠুভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠানে নেয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঈদগাহে সকল প্রবেশ পথ এবং ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের নামাজের স্থানসহ ঈদগাহ মাঠের গোটা প্যান্ডেলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। প্রধান এ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাদা পোশাকে র‌্যাব এবং পুলিশ সদস্যরা ঈদগাহ ময়দানে সার্বক্ষণিক তত্পর ছিলেন।

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এবার ৪০৯টি স্থানে ঈদ জামাতের আয়োজন করে। দক্ষিণ সিটির জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রধান জামাতসহ ২২৯টি এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৮০টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীতে দ্বিতীয় বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত হয় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে। এখানে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররমে প্রথম জামাত সকাল সাতটা, দ্বিতীয় জামাত সকাল আটটায়, তৃতীয় জামাত সকাল নয়টা, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টা এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উদ্যোগে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সকাল সাড়ে সাতটায় ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা কর হয়। এখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং এলাকার সাধারণ মানুষ নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমটি সকাল আটটায় ও অপরটি নয়টায়। এছাড়া সকাল ৮টায় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মেইন গেট সংলগ্ন মাঠ ও শহীদুল্লাহ হল লনে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুল জামে মসজিদে ঈদুল আজহার জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্ল্ল্লাহপাকের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ, তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন এবং তাঁরই রাস্তায় সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের মহিমায় কোরবানী করছেন। অনেকে ঈদের দ্বিতীয় দিন ও তৃতীয়দিনও কোরবানী করবেন।

সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে। এবার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রায় ৪ লাখ ৭৫ হাজার পশু কোরবানীর জন্য ১ হাজার ১৭৪টি স্থান নির্ধারণ করা হয়। এরমধ্যে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৬২৫টি ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ৫৪৯টি। শনিবার সকালের দিকে ঢাকাসহ দেশের কিছু কিছু এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেও ঈদ জামাত ও কোরবানীর ব্যাঘাত ঘটেনি।

টিআর/ ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭