ব্রাজিলিয়ান লেখক পাওলো কোয়েলহো'র মাস্টারপিস "দ্য আলকেমিস্ট" উপন্যাসটার জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নাই। দ্যাট'স গ্রেট! অত্যন্ত সাধারণ কাহিনীর মধ্য দিয়ে অসাধারণ দার্শনিকতা, জীবনের দিক নির্দেশনা চমৎকারভাবে ফুঁটিয়ে তুলেছেন।
কাহিনীটা সান্তিয়াগো নামের এক বইপড়া রাখাল বালকের স্বপ্নে গুপ্তধনপ্রাপ্তির, যে স্বপ্নে দেখে একটা ছেলে মিশরের পিরামিডে গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছে। এই খোয়াবের ব্যাখা জানতে সে এক মহিলা গণকের শরণাপন্ন হয়। সে যে ভুল স্বপ্ন দেখেনি এক-দশমাংশ গুপ্তধনের বিনিময়ে এটা নিশ্চিত করে মহিলা গণক। সালেমের ছদ্মবেশী রাজাও তাকে এবিষয়ে নিশ্চিত করে। এবং অনেক সদুপদেশ দেয়। তারমধ্যে কোয়েট্যাবল: "সুখের গোপন উৎস হলো, তোমাকে পৃথিবীর সব গোপন বিস্ময় দেখতে হবে, সেইসাথে মনে রাখতে হবে চামচের উপর থাকা একবিন্দু তেলের কথাও।" অসাধারণ একটা কোয়েট! এই যে আমার কথাই বলি, একাডেমিক পাঠ না পড়ে সারাক্ষণ আউট বই নিয়ে বিজি থাকি, এটা পুরোটা ঠিক নয়। ওই যে ওই কথাটা মানতে হবে, মানে, চামচে তেল রাখা লাগবে আবার সব বিস্ময়ও দেখা লাগবে।
ভেড়ারপাল বেচে শুরু হয় সান্তিয়াগোর মিশর যাত্রা। তাঞ্জানিয়া এসে গাইডের বিশ্বাসঘাতকতায় পথ খরচ খোয়ায়ে কাজ নেয় এক স্ফটিকের দোকানে। এখানে প্রায় বছরখানেকের মতো কাজ করে ফের ভেড়াপালনের জন্য আন্দালুসিয়ায় ফিরতে চাইলেও ফেরা হয় না, দু'শ বছর বয়স্ক আলকেমিস্টের সন্ধানে বের হওয়া এক ইংরেজের সাথে যোগ দেয় মিশরে পিরামিডের সেই গুপ্তধনের সন্ধানে।
বইয়ের প্রথম দিকের একটা কথা মনে পড়ে গেল। সান্তিয়াগো ভেড়ার লোম বেচতে এক বণিকের কাছে গেলে বণিকের মেয়ে বলে, "আচ্ছা, তুমি পড়তে জানলে রাখাল ছেলে কেন?" আমার মনে হচ্ছিল মেয়েটা আমাকে কথাটা বলল!
"যখন তুমি কিছু পাবার জন্য চেষ্টা করবে তখন পুরো বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তা পাই দিতে ফিসফাস করবে।" কথা কিন্তু সঠিক, হুদাই আমরা পৃথিবীকে ভুল বুঝি। তো, কথাটা হচ্ছে কি, বইটার পরতে পরতে আমার মতো লক্ষ্যভ্রষ্ট লোকেদের জন্য এমন সব দিকনির্দেশনা আর দার্শনিক কথাবার্তা। যারা এখনো পড়েননি, পড়ে ফেলুন। আর কিছু বলার নাই।
অনলাইন থেকে নেয়া
এমএসএল