চার থেকে সাত লাখ টাকার চুক্তিতে ‘ভর্তি জালিয়াতি’


অপরাধ টাইমস | Published: 2017-11-22 17:07:13 BdST | Updated: 2024-05-21 00:50:43 BdST

চার থেকে সাত লাখ টাকার চুক্তি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে বহু শিক্ষার্থীকে ভর্তি করতে সহায়তার করতো বলে স্বীকার করেছে এর সঙ্গে জড়িত একটি জালিয়াতি চক্র।

পুলিশ বলছে, ওই জালিয়াত চক্রের প্রধান নাভিদ আনজুম তনয় ২০১৫ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি হতে সহায়তা করেছে।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম।

এর আগে, মঙ্গলবার ভোরে প্রশ্নপত্র ফাঁস জালিয়াতির ঘটনায় চক্রের মূলহোতা তনয় ও আকাশসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি’র অর্গানাইজড ক্রাইম টিম।

এদের মধ্যে ৭ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল টিমের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভর্তি হওয়া ৭ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়।

তারা হলেন- তানভীর আহমেদ মল্লিক, মো. বায়জিত, নাহিদ ইফতেখার, ফারদিন আহমেদ সাব্বির, প্রসেনজিৎ দাস, বিফাত হোসাইন এবং আজিজুল হাকিম।

তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস জালিয়াতির ঘটনায় আমরা তদন্ত শুরু করি। এই চক্রের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতারের পর তাদের স্বীকারোক্তিতে চক্রের মূলহোতা নাভিদ আনজুম তনয় ও এনামুল হক আকাশের নাম পাই।

এর আগে, গত ১ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁও থেকে ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফিকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৪ নভেম্বর রংপুরের কামাল কাছমা বাজার এলাকা থেকে তনয় এবং গাজীপুর থেকে এনামুল হক আকাশকে গ্রেফতার করা হয়।

                                           সংবাদ সম্মেলন

 

গ্রেফতার শিক্ষার্থী ও জালিয়াতি চক্রের রাজনৈতিক আদর্শের বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল বলেন: তাদের অপরাধী হিসেবে আমরা আটক করেছি। কেউ রাজনৈতিক দলের কোনও সদস্য কিনা সেটা বিবেচনা করিনি।

মূলহোতা তনয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং আকাশ গাজীপুরের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।

তিনি বলেন, গ্রেফতারের পর রিমান্ডে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ডিজিটাল ডিভাইসের বিষয়টি স্বীকার করেছে। আকাশ ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয় বলেও আসামীরা জানায়।

বিশেষ এ পুলিশ সুপার আরো বলেন, এই চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষা প্রশ্নপত্র ফাঁস জালিয়াতি করে আসছিল। এর জন্য ডিজিটাল ডিভাইস সরবরাহ করতো পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষার ৩০ মিনিট আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ওই ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের উত্তর বলা হতো বলেও জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি করিয়ে দেওয়ার কথা বলে এই চক্রটি তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ৪ থেকে ৭ লাখ টাকা নিতো বলে আমরা তথ্য প্রমাণ পেয়েছি।

এই চক্রের আরো সদস্য রয়েছে তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। সেই সঙ্গে এই চক্রের মুলহোতা তনয়ের পৃষ্ঠপোষক কারা তাদেরও খুঁজে বের করা হবে বলেও জানা তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দীন খান, অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দিন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম এবং সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাস।

টিআই/ ২২ নভেম্বর ২০১৭