সাংবাদিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় ২ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করবে না ডিআইইউ


Rakibul Islam | Published: 2024-04-01 16:25:22 BdST | Updated: 2024-04-30 03:03:24 BdST

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি, সিজিপিএ বাণিজ্য এবং নারী কেলেঙ্কারির মতো ঘটনাকে তুলে ধরায় সম্প্রতি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) ১০ জন সাংবাদিক শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের পর এবার সাংবাদিকতার জেরে দুই শিক্ষার্থীকে মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি করাবে না বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷

সোমবার (১ এপ্রিল) ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে৷ এর আগে গত ২৮ মার্চ এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন৷

চিঠিতে বলা হয়েছে, সাংবাদিক সমিতিতে আপনার সম্পৃক্ততা থাকলেও আপনি ইতিমধ্যে অনার্স ডিগ্রী সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে আপনি ইউনিভার্সিটির কাছে চলমান শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত নন। এমতাবস্থায় কর্তৃপক্ষ আপনাকে অত্র ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি করাবেন না মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোঃ ইসমাম হোসেন বলেন, সাংবাদিকতা করার দায়ে আমাদের ১০ জনকে সাময়িক বহিস্কার করার পর ইউনিভার্সিটি প্রশাসন আবার নতুন করে আমাদের দুইজনকে মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি করাবেনা বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে৷ আমাদের তারা মানসিকভাবে হেনস্তা করেই চলছে৷ দফায় দফার বাড়ানো হচ্ছে সাময়িক বহিস্কারাদেশের মেয়াদও৷ বিশ্ববদ্যালয় প্রশাসন তাদের অপকর্ম আড়াল করতেই সাংবাদিকতা বন্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে৷

তিনি আরও বলেন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাংবাদিক সমিতি বন্ধ এবং ১০ ছাত্রেকে বহিষ্কারের মাধ্যমে বিশ্ববিদয়ালয় প্রশাসন সাংবিধানিক অধিকার (অনুচ্ছেদ ৩৮) প্রয়োগ করতে বাধা সৃষ্টি করেছে। এটি একইসাথে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ (আইনের দৃষ্টিতে সমতা), অনুচ্ছেদ ৩১ (আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার), অনুচ্ছেদ ৩২ (জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতায় অধিকার-রক্ষণ), অনুচ্ছেদ ৩৬ (চলাফেরার স্বাধীনতা), অনুচ্ছেদ ৩৭(সমাবেশের স্বাধীনতা) ও অনুচ্ছেদ ৩৯ (চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা ও বাক-স্বাধীনতা) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা এ ঘটনার সঠিক সুরাহা চাই৷

ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এক মনচাই নিয়ম বাতলে দিচ্ছে৷ যখন যেভাবে ইচ্ছা সেই নোটিশ দিচ্ছে৷ আমাদের নামে মিথ্যা প্রচারোনা চালাচ্ছে৷ ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতা করা এবং পড়াশোনা করাটাই যেন একটা অপরাধ৷

এ বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ প্রমানিত হয়নি৷ কিন্তু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হতে পারবেনা৷

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে চলছে নানা সমালোচনা। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের অর্ধশত সংগঠন৷ এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নিন্দা জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় সকল সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ৷ এদিকে সাংবাদিকতায় যুক্ত এই দশ শিক্ষার্থীর
বহিস্কারাদেশ কেন বাতিল হবেনা তার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে বিশ্ববিদয়ালয় মঞ্জুরি কমিশন ইউজিসি৷