ছাত্র অধিকার পরিষদের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত


ঢাবি টাইমস | Published: 2020-02-18 01:38:21 BdST | Updated: 2024-05-12 05:16:51 BdST

 ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নাম সংক্ষিপ্ত করে ‘বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ’ নামকরণ করা হয়েছে।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে বটতলায় সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।

হাসান আল মামুন বলেন, “বিভিন্ন আন্দোলনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং গণ-মানুষের অধিকার আদায়ের অধিকার পরিষদ যৌক্তিক ভূমিকা পালন করেছে। ব্যাপক কারচুপির মধ্য দিয়েও ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সমর্থন লাভ করে সংগঠনটি। আজ থেকে বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামটি সংক্ষেপে ‘বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ’ করা হলো।”

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাধারণ অধিকার পরিষদের স্লোগান হবে-শিক্ষা, ঐক্য, প্রগতি। এটি একটি স্বাধীন ছাত্র সংগঠন হিসেবে কাজ করবে। অন্যায় অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে গণমানুষের নৈতিক অধিকার আদায়ে কাজ করবে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গুণগত পরিবর্তনে কাজ করবে। সামাজিক ন্যায়বিচার, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে কাজ করবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নূর বলেন, বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদ সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আদায়ের জন্য গড়ে ওঠে। অধিকার আদায়ের জন্য এই সংগঠনের জন্ম হয়েছে। এই সংগঠনটি শুরু থেকেই বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রাম ও গণমানুষের কল্যাণে কাজ করছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই, দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে যে একটি ভয়ার্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে, শিক্ষাঙ্গনগুলোতে যে মিনি ক্যান্টনমেন্ট তৈরি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।’

তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে ভয় পায়। একটি কর্তৃত্ববাদী ছাত্র সংগঠনের একক আধিপত্য ক্যাম্পাসগুলোতে চলমান রয়েছে এবং তাদের অপকর্মের সহযোগী হিসেবে রয়েছে শিক্ষাঙ্গনগুলোর প্রশাসন।

নূর বলেন, আমরা চাই, সত্তর-আশির দশকে একটি কল্যাণমূলক যে ছাত্র রাজনীতি রাজনীতি ছিল সেই ছাত্র রাজনীতির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদকে তুলে ধরতে। যারা সাধারণ মানুষ, সাধারণ শিক্ষার্থীর অধিকার আদায়ে কাজ করবে।

ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধের বিষয়ে ডাকসু ভিপি বলেন, “ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, নব্বইয়ের স্বৈরাচার আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তৎকালীন সময়ে ছাত্র রাজনীতি একটি বড় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, নব্বইয়ের পরবর্তী সময়ে দেশের ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে, সুপরিকল্পিতভাবে দেশের ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ করে দেশের রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে একটি পেশিশক্তি নির্ভর রাজনীতির নামে একটি অপরাজনীতি দলগুলো চালু করেছে। এ কারণে ক্যাম্পাসগুলো একটি ‘মিনি ক্যান্টনমেন্টে’ পরিণত হয়েছে। যার বিপরীতে কাজ করছে বাংলাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদ।”

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, ‘জেল-জুলুম, শত বাধা পেরিয়ে আজ আমাদের সংগঠন তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। সারা দেশের মানুষ আজ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সংগঠন যে যাত্রা শুরু করেছে সেই যাত্রার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা এগিয়ে যাব।’

অনুষ্ঠানে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান, ফারুক হোসেন, মো. আতাউল্লাহ, বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ বিভিন্ন শাখার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।