বুয়েটের কমিটি নিয়ে যা বলল ছাত্রদল


Dhaka | Published: 2020-07-26 18:01:26 BdST | Updated: 2024-04-29 19:46:18 BdST

গত বছরের অক্টোবরে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ৷ সেই নিষেধাজ্ঞা না মেনে গতকাল শুক্রবার বুয়েটে সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণা করেছে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল৷

ছাত্রদল বলছে, ছাত্ররাজনীতি না থাকলে বুয়েটে 'উগ্রবাদের' উত্থান ঘটার আশঙ্কা রয়েছে৷ তাই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত তারা মানে না৷ তবে বুয়েট কর্তৃপক্ষ বলছে, নিষেধাজ্ঞার পরও কমিটি দেওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীর স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বুয়েট শাখা ছাত্রদলের আংশিক কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন৷ এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটিসহ এই কমিটির অধীন ইউনিটগুলোর কমিটির তালিকা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে৷

বুয়েট শাখা ছাত্রদলের এই কমিটিতে আসিফ হোসেনকে আহ্বায়ক, আলী আহমদকে সদস্য সচিব ও ফয়সাল নূরকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে৷ এ ছাড়া কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে নওরোজ রহমান ও মুসাওয়ার আহমেদকে৷

গত বছরের অক্টোবরে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী৷ এই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে দুই মাস অচল ছিল প্রতিষ্ঠানটি৷ পরে দাবি অনুযায়ী সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কার ও র‍্যাগিংয়ে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া হলে ডিসেম্বরে ক্লাস-পরীক্ষায় ফেরেন শিক্ষার্থীরা৷

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলছেন, বুয়েট কর্তৃপক্ষের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত তাঁরা মানেন না৷ ইকবাল আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তটি ছিল একটি অপরিপক্ব সিদ্ধান্ত৷ আর এটি মূলত ছিল পাকিস্তানের সামরিক শাসকের সিদ্ধান্ত৷ স্বাভাবিক মতপ্রকাশ বাধাগ্রস্ত হলে সেখানে উগ্রবাদের জন্ম হয়৷ আমরা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি৷ তাই ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে আমরা গ্রহণ করিনি আর করবও না৷’

তবে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও ছাত্রদলের এই কমিটি গঠনের ঘটনায় বিস্মিত বুয়েট কর্তৃপক্ষ৷ প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমান আজ শনিবার এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী বুয়েট কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিল৷ তখন দেশবাসী এই সিদ্ধান্তকে অভিনন্দিতও করেছিলেন৷ তারপরও একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক সংগঠন বুয়েটে তাদের শাখা কমিটি করল৷ এটি আমাদের জন্য নতুন একটি অভিজ্ঞতা৷ বুয়েটের ডিসিপ্লিনারি বোর্ড এ বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে৷ কমিটিতে বুয়েটের সাবেক কোনো শিক্ষার্থী থেকে থাকলে তাঁর বা তাঁদের সনদ বাতিল করার সুযোগও রয়েছে৷’