বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে সারাদেশে ছাত্রলীগের একযোগে বিক্ষোভ


Dhaka | Published: 2020-12-07 03:13:21 BdST | Updated: 2024-05-12 07:55:36 BdST

কুষ্টিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রের নির্দেশনায় সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা ও উপজেলা ভিত্তিক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

রবিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় এসব মিছিল ও সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

.

লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগ, রংপুর মহানগর ছাত্রলীগ, রংপুর জেলা, দিনাজপুর জেলা, খুলনা জেলা, খুলনা মহানগর , বাগেরহাট জেলা, ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ, ঠাকুরগাঁও জেলা, নীলফামারী জেলা, বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগ, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগ, গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগ ,  ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রলীগ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ, খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগসহ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অন্তর্গত প্রতিটি জেলা, উপজেলা, কলেজ ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল পালিত হয়।

কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।ভাস্কর্য ভাঙচুর ও অবমাননার ঘটনায় এখন থেকে আর প্রতিবাদ নয় বরং প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

রোববার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এ ঘোষণা দেন ছাত্রলীগের নেতারা।

.

বক্তব্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘যারা বাংলাদেশকে স্বীকার করেনি, রাতের অন্ধকারে ওই পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা যেমন করে বাংলাদেশে হানা দিয়েছিল, সেই পাকিস্তানি বাবাদের কথা শুনে যারা জাতির পিতার ভাস্কর্যকে অবমাননা করেছে, সেই কুলাঙ্গারদের যেখানে পাবেন তাদেরকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে দেয়ার আগে এদের গণপিটুনি দিয়ে হাত-পা ভেঙে দেবেন। তারপর পাকিস্তান পাঠিয়ে দেবেন।’

তিনি ভাঙচুরকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘তোরা রাতের অন্ধকারে আসিস না, বাবুরা। তোরা দিনে আয়। সামনে এসে কথা বল। আমি একা তোদের মোকাবিলা করবো। আমি আল নাহিয়ান খান জয় একাই একশো।’

সমাবেশে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘আপনারা কথায় কথায় হুঁমকি দেন। আপনারা বলেন, এদেশে নব্বই ভাগ মুসলমানদের দেশ। কিন্তু নব্বই ভাগ মুসলমানের নিরানব্বই ভাগই আপনাদের বিরোধিতা করে। আপনাদের এই ধরনের কর্মকাণ্ডের অবজ্ঞা করে। তাহলে এই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে?’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ইমোশন (আবেগ), সংবিধান, রাষ্ট্রীয় স্বার্থ নিয়ে কথা বলার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে? একথা আপনাদের স্পষ্ট করতে হবে। ওহি নাজিলের মতো সকাল বেলা হঠাৎ করে বলা শুরু করলেন ভাস্কর্য থাকবে না। আজব ব্যাপার! আপনাদের বারবার সাবধান করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু গতকাল আপনারা আপনাদের সীমা লঙ্ঘন করেছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অনেক ধৈর্য ধরেছে। অনেক প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু এখন আর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিবাদে বিশ্বাস করবে না। আপনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘পিটুনি দেন সব ঠিক হয়ে যাবে। ২০১৩ সালের ৫-৬ মে হুজুরদের ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছিল, তখন মাথা ঠিক হয়েছিল। এখন মাথা আবার নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আবারও ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় হয়ে গেছে।’

রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে কাঠমোল্লারা মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে রাজনৈতিক শ্রমিকে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ডাকসু সাবেক এজিএস ও ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।

রবিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজুভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রলীগ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সাদ্দাম বলেন, আমাদের মাদ্রাসায় লাখ লাখ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। তারা আমাদের ভাই, বন্ধু, সহযোদ্ধাা। কিন্তু আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, মাদ্রাসার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের অসহায়ত্বকে পূঁজি করে কাঠমোল্লারা রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। মাদ্রাসায় এতিম-কোমলমতি শিশুরা লেখাপড়া করে। এসব কোমলমতি শিশুদেরকে মোল্লারা বাধ্যতামূলক রাজনৈতিক শ্রমিকে পরিণত করেছে।

.

মোল্লারা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে সাদ্দাম আরও বলেন, আমাদের আহবান থাকবে এদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সরকারে কাছেও আহবান থাকবে, জাতির পিতা আমাদেরকে যে শিক্ষা আদর্শ উপহার দিয়েছেন- বিভাজিত শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তে বিজ্ঞান সম্মত কর্মমুখি শিক্ষা ব্যবস্থা সেটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। করো অসহায়ত্বকে পূঁজি করে কেউ যেন তাদেরকে রাজনৈতিক শ্রমিকে পরিণত করতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদেরকে সোচ্চার হতে হবে।

তিনি বলেন, মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থীদেরকে কাঠমোল্লা বলার সুযোগ নেই। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বন্ধু। তাদের প্রতি আমাদের আহবান থাকবে আসুন আমরা আজ এক হয়ে এই কাঠমোল্লাদেরকে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা যেন তাদের পূর্বের গৌরব আর ঐতিহ্যকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত থাকে তাদের প্রতি আমাদের আহবান থাকবে।

প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ।