ঢাবিতে ছাত্রলীগ-বামজোটের সংঘর্ষে আহত ১২ (ভিডিও)


ঢাকা | Published: 2021-03-24 01:08:20 BdST | Updated: 2024-05-15 15:16:09 BdST

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও প্রগতীশীল বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ৩০ মিনিট ব্যাপী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সাংবাদিকসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বিকেলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফরের প্রতিবাদে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো। এ সময় তারা টিএসসিতে জায়গা না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোপার্জিত স্বাধীনতা চত্ত্বরের দক্ষিণ পাশে মোদীর কুশপুত্তলিকা দাহ করার উদ্যোগ নেয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এতে বাদা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অতিথি করার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ করার কর্মসূচি দিয়েছিল গণসংহতি আন্দোলনের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। কিন্তু কর্মসূচির আগেই রাজু ভাস্কর্য দখলে নেয় ছাত্রলীগ। আর কুশপুত্তলিকা নিয়ে পালান ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্র ফেডারেশনের পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল আজ বেলা সাড়ে ১১টায়। ছাত্রলীগ রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেয় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে। বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে ছাত্রলীগের দুজন কর্মী মোদির কুশপুত্তলিকা ছিনিয়ে নেন।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাহিত্যবিষয়ক উপসম্পাদক এস এম রিয়াদ হাসানের নেতৃত্বে সকাল থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন সংগঠনের ৬০ থেকে ৭০ জন নেতা-কর্মী। তাঁদের অবস্থানের কারণে ঘোষিত সময়ে কর্মসূচি শুরু করতে না পেরে টিএসসির সঞ্জীব চত্বরে মোদির কুশপুত্তলিকাসহ অবস্থান নেন ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা। বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে রাজু ভাস্কর্য থেকে নেমে সঞ্জীব চত্বরে যান ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। তাঁরা জোর করে কুশপুত্তলিকা ছিনিয়ে নেন। ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা আপত্তি জানাতে গেলেও মুহূর্তের মধ্যেই একটি মোটরসাইকেলে করে তাঁরা পালিয়ে যান।

এরপর টিএসসির সামনেই অবস্থান করছিলেন ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তখনো রাজু ভাস্কর্য ও এর আশপাশে অবস্থান করছিলেন। দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে টিএসসির সামনে থেকে মিছিল বের করে ছাত্র ফেডারেশন। মিছিলটি শামসুন্নাহার হল, রোকেয়া হল ও রাজু ভাস্কর্যের সামনে দিয়ে ঘুরে টিএসসির সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা। মোস্তফা অভিযোগ করে বলেন, ‘মোদির মতো একজন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাবাজকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতে আগমনকে ছাত্র ফেডারেশন কোনোভাবেই বরদাশত করবে না। তাঁর আগমনের প্রতিবাদে আমাদের দেওয়া আজকের কর্মসূচিকে ভন্ডুল করার জন্য ছাত্রলীগ কুশপুত্তলিকা ছিনতাই করেছে।

তাদের এই কর্মকাণ্ড অগণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। ছাত্রলীগ গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। তারা কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক হতে পারে না। যতই বাধা আসুক, আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে।’

গোলাম মোস্তফার বক্তব্যের পর নরেন্দ্র মোদির কয়েকটি সাদা-কালো ছবি পোড়ান ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতা সাদিক রেজা, মশিউর রহমান, এম এইচ রিয়াদ, ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক সৈকত আরিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে যাঁর নেতৃত্বে রাজু ভাস্কর্যে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন, সেই এস এম রিয়াদ ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খানের অনুসারী। তিনি কুশপুত্তলিকা ছিনতাই ও কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রাজু ভাস্কর্যে আজ বিকেলে আমাদের একটি আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি আছে। এর প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা এখানে জড়ো হচ্ছেন। এ ছাড়া মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সিনেমা দেখানোর একটি কর্মসূচি এখানে চলমান। তাদের (ছাত্র ফেডারেশন) তো অভিযোগের শেষ নেই।’

https://www.facebook.com/campustimesbd/videos/770646976899462/