বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তির অপরাধে ঢাবি শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের


ঢাবি টাইমস | Published: 2020-09-01 21:47:31 BdST | Updated: 2024-05-09 01:35:50 BdST

সংবিধান লঙ্ঘন করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কটূক্তি করার অপরাধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক ড: মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও গ্রেফতারের দাবি করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

১লা সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে এই দাবি জানানো হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুনের সঞ্চালনায় উক্ত কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আরোও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে যেয়ে স্মারকলিপি হস্তান্তর করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন বলেন, "মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সবসময় মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে আপোষহীন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলঙ্ক ড: মোর্শেদ হাসান খান স্বাধীনতা বিরোধীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের ভুল ইতিহাস উপস্থাপন করেছেন যা ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। গত বছর দৈনিক নয়াদিগন্ত ও যায়যায়দিন পত্রিকার নিবন্ধে প্রকাশিত তার লেখায় সংবিধানের ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম তফসিল ও অনুচ্ছেদ ৪ক লঙ্ঘন হয়েছে। উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কটূক্তি করার অপরাধে এই শিক্ষক কখনোই মহান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারেন না। স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবিরের এজেন্ট পাকিস্তানী দালালের কলঙ্ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বইতে পারে না। দীর্ঘদিন কালক্ষেপণ করার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে বহাল রাখার চেষ্টা করলেও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ তা কখনোই মেনে নেবে না।

সংবিধান লঙ্ঘন ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা এ্যাটর্নি জেনারেলের সুপারিশের পরেও পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে এই শিক্ষক। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও ইতিহাস বিকৃতির দায়ে অভিযুক্ত এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অপরাধের প্রমাণ পাওয়ায় এ্যাটর্নি জেনারেল বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাদা দলের অন্যতম নেতা মার্কেটিং বিভাগের এই শিক্ষক কে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করলেও রহস্যজনকভাবে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। দুঃখের বিষয, সুপারিশের পর এক বছর চলে গেলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে আজও পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক কোন শাস্তি প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। অবৈধ সামরিক শাসক খুনী জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করায় সংবিধান লঙ্ঘনে রেজিস্ট্রার এক সপ্তাহে চাকরিচ্যুত হলেও আরও ভয়াবহ ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েও বহাল আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি ও বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাদা দলের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা মোর্শেদ হাসান খান। তদন্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও ইতিহাস বিকৃতির প্রমাণ মেলার পর এ্যাটর্নি জেনারেল চ্যাকরিচ্যুতির কথা বললেও বহাল আছেন এই শিক্ষক। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা এ্যাটর্নি জেনারেলের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নামকাওয়াস্তে ‘লঘু’ দন্ড দিয়ে ওই শিক্ষককে বহাল রাখার প্রক্রিয়া চলছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী এধরণের কোন ষড়যন্ত্র করলে তা প্রতিহত করবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।"

আল মামুন আরো বলেন, "বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও ভয়াবহ ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে ওই শিক্ষক চরমভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তার অপরাধের জন্য দুইভাবেই শাস্তি হতে পারে। এক সংবিধান লঙ্ঘনের অপরাধে। অন্যদিকে পত্রিকায় ভয়াবহ ইতিহাস বিকৃতির জন্য তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনেও মামলা হওয়ার কথা। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ নেই। এ্যাটর্নি জেনারেলের সুপারিশও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বাস্তবায়ন না হওয়ার অর্থ হচ্ছে ঢাবি প্রশাসন তাকে চাকুরীতে বহাল রাখতে চায়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কখনোই এই ষড়যন্ত্র বরদাশত করবে না।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা বিরোধী কোন অপশক্তির জায়গা হবে না। আমরা অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলঙ্ক ড: মোর্শেদ হাসান খানের স্থায়ী বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি