১৫ লাখ টাকা নিয়েও চাকরি দেননি পৌর মেয়র, অনশনে মা-মেয়ে


Meherpur | Published: 2020-09-02 02:37:09 BdST | Updated: 2024-05-18 13:23:28 BdST

মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার মেয়রকে ১৫ লাখ টাকা দিয়েও চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চেয়ে অনশনে বসেছেন মা-মেয়ে। সোমবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত গাংনী উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনার চত্বরে অনশন করেন তারা।

অনশনকারীরা হলেন মেহেরপুর গাংনীর পৌরসভার শিশিরপাড়ার শাহাবুদ্দিন বাহাদুরের স্ত্রী হোসনে আরা ও মেয়ে মৌমিতা খাতুন পলি।

পৌরসভার কর আদায়কারী পদে চাকরি দেয়ার নামে গাংনী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও পৌরসভার মেয়র আশরাফুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী জেলা পরিষদের সদস্য সাহানা ইসলাম শান্তনার বিরুদ্ধে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেন তারা।

মৌমিতা খাতুন পলি বলেন, মেয়র টাকা ফেরত না দেয়ায় প্রথম দফা অনশন ও সালিশ-বৈঠকে কোনো সমাধান না হওয়ায় কূলকিনারা না পেয়ে সোমবার সন্ধ্যা থেকে দ্বিতীয়বার অনশনে বসি। গাংনী পৌরসভায় সহকারী কর আদায়কারী পদে নিয়োগের জন্য পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। জমি বিক্রি ও ধারদেনা করে মেয়রকে ১৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ও মেয়রের নির্দেশে ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক মেহেরপুর শাখায় মেয়র আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য সাহানা ইসলাম শান্তনার ৬৪৫৪ নম্বর হিসাবে ৫ লাখ ৭০ হাজার, ২৫ জানুয়ারি ৫০ হাজার, ৫ ফেব্রুয়ারি ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা জমা দেয়া হয়। বাকি টাকা নগদে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, টাকা নিয়ে ২০১৮ সালের ১৯ মে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও আমাকে নিয়োগ না দিয়ে অন্য একজনকে সহকারী কর আদায়কারী পদে নিয়োগ দেন মেয়র। আমাকে নিয়োগ না দেয়ায় টাকা ফেরত চাইলে মারধর ও হুমকি দিয়ে পৌরসভা থেকে বের করে দেন তিনি।

পলি বলেন, টাকা ফেরতের দাবিতে গত ২০ আগস্ট বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত গাংনী শহীদ মিনারে অনশন করি। পরে গাংনী থানার ওসি বিচারের আশ্বাস দিলে বাড়ি ফিরে যাই।

গাংনী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবাইদুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে গত ২১ আগস্ট রাতে গাংনী থানা চত্বরে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের উপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে ১৫ লাখ টাকা উৎকোচ নেয়ার অভিযোগে সালিশ-বৈঠক হয়। বৈঠকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, মৌমিতা খাতুন পলির মা-বাবাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পলির স্বামী মোমিনকে নিয়ে বসে তাদের মধ্যে টাকা লেনদেনের বিষয়টি মীমাংসা হওয়ার কথা। কিন্তু বিষয়টি অমীমাংসিত রয়ে গেছে। এ বিষয়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ খালেক জানান, মোমিন কোনো টাকা ফেরত নেননি বলে জানিয়েছেন। গত শুক্রবার বিষয়টি মীমাংসার কথা থাকলেও পৌর মেয়র সালিশ-বৈঠকে উপস্থিত না হওয়ায় অমীমাংসিত রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে মেয়র আশরাফুল ইসলামের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা যেভাবে বলবেন সেভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।