মানব পাচার মামলা চলমান থাকায় রাজারবাগ পির দিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত করাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইলিয়াস আলী মণ্ডল। সঙ্গে ছিলেন মাছুমা জামায়েল মুন্নি।
আইনজীবী ইলিয়াস আলী মণ্ডল বলেন, ‘রাজারবাগ দরবার শরিফের বিরুদ্ধে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেছে, সেটি আমরা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করি। ওই রিটের শুনানি নিয়ে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় মানবাধিকার কমিশনের তদন্তকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
‘আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব, কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশ প্রধান, চাঁদপুর পুলিশ সুপারসহ ৯ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
আইনজীবী বলেন, ‘রাজারবাগ পিরের বিরুদ্ধে রিটকারী ইকরামুল হক কাঞ্চনের বিরুদ্ধে আমার মক্কেল মোহাম্মদ সোহেল মানব পাচার মামলা করেন। ওই মামলাটি চাঁদপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারাধীন।
‘মানবাধিকার কমিশনের আইন অনুযায়ী মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ওই মামলার বিষয়ে কোনো তদন্ত করা যাবে না। অথচ কমিশন সেই কাজটিই করেছে। এ ছাড়া কমিশনের তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে রাজারবাগ পিরের প্ররোচনায় আমার মক্কেল নাকি মামলা করেছেন। একটি মামলা চলমান থাকা অবস্থায় কমিশন এমন তদন্ত করতে পারে না।’
আইনজীবী মণ্ডল আরও বলেন, ‘মানবাধিকার কমিশন তার তদন্ত রিপোর্টে বলেছে, মানব পাচার মামলার আসামি ইকরামুল আহসান কাঞ্চন ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কমিশনের কাছে তার বক্তব্য দিয়েছেন। অথচ এই কাঞ্চন ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি মানব পাচার মামলায় কারাগারে যান এবং জামিনে মুক্ত হন ২৫ ফেব্রুয়ারি। এখন প্রশ্ন হলো, ২৫ ফেব্রুয়ারি যদি তিনি জামিন পান তাহলে ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি কীভাবে মানবাধিকার কমিশনের কাছে বক্তব্য দিলেন।
‘রাজারবাগের পির দিল্লুর রহমান ও তার প্রতিষ্ঠানসমূহের নামে যেসব সম্পদ রয়েছে তার তালিকা প্রস্তুত করে আয়ের উৎস ও রাজস্ব দেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে- এমন সাত দফা সুপারিশ দিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে।’
ওই প্রতিবেদন দাখিলের পর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ কমিশনের দাখিল করা সুপারিশ বিবেচনায় নেয়ার নির্দেশ দেয়।
আদালতের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির, এমাদুল হক বশির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।